ডুমুর ফল এর উপকারিতা -ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন ডুমুর ফল এর উপকারিতা সম্পর্কে এবং ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আমরা আজ ডুমুর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আপনি ডুমুর ফলের উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানেন তাহলে একদম অবাক হয়ে যাবেন। তাই ডুমুর ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ডুমুর ফল বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে রাস্তার ধারে অথবা জঙ্গলের মধ্যে এই গাছটি জন হয়। এই গাছটির ফল খোকসা ফলের মত। ডুমুর ফল বিভিন্ন ভাবে জানা যায় অত্যন্ত উপকারী। ডুমুর ফল এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে।
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন ডুমুর ফলের উপকারিতা কি? এবং ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম কি? এ সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটির শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ডুমুর ফলে এর উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন ডুমুর ফলের উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা সকলেই জানি ডুমুর ফল একটি অত্যন্ত উপকারী ফল। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য এই ডুমুর ফল অত্যন্ত উপকারী। কোন কোন রোগের জন্য উপকারী আমরা এখন নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব চলুন শুরু করি।
যাদের দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য অনেক উপকারী এই ডুমুর ফল। এই ডুমুর ফল যদি কোন সুগার আলা ব্যক্তি বা ডায়াবেটিস রয়েছে এমন ব্যক্তি খায় তাহলে তার সুগার অথবা ডায়াবেটিস একদম স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসবে।
যারা মানসিক চাপে ভুগছেন তাদের জন্য এই ডুমুর অত্যন্ত উপকারী। ডুমুর ফল বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে্। তাই প্রতিদিন ডুমুর খাবেন।
আরো পড়ুন = ডালিয়া ফুলের উপকারীতা জেনে নিন।
ডুমুরের প্রচুর পরিমাণ আইরন রয়েছে। যদি আমাদের শরীর থেকে আয়রন কমে যায় তাহলে আমাদের শরীরের রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিন কমে যায়। আর যদি হিমোগ্লোবিন কমে যায় তাহলে অত্যন্ত ক্ষতি হতে পারে আমাদের শরিরের। যদি প্রতিদিন আপনি একটি করে বা দুইটি করে ডুমুর খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিন বেড়ে যায়। এবং শরীর সুস্থ থাকে।
ডুমুর ফল আমাদের হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।। কারণ ডুমুরে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে যোগান দেয়। তাই প্রতিদিন ডুমুর খাবেন।
যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে এবং চুল উঠে যাচ্ছে তাদের জন্য ডোমার ফল অত্যন্ত উপকারী। তারা যদি প্রতিদিন ডুমুর ফল খায় তাহলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এবং চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
যারা আমাশয় ভোগেন অর্থাৎ কিছুদিন পর পর দেখেন যে আপনার আমাশা হচ্ছে তাদের জন্য এই ডুমুর ফল। তারা যদি ডুমুর ফল নিয়মিত খাই তাহলে তাদের এই আমাশার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।
যাদের হৃদয়ের দুর্বল অর্থাৎ হার্ট দুর্বল তারা এই ডুমুর প্রতিদিন খেতে পারেন। কারণ এই ডুমুর হাটের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যদি আপনি প্রতিদিন এই ডুমুর ফল খান তাহলে আপনার হার্ট অ্যাটাক থেকে মুক্তি পাবেন্। অর্থাৎ হার্টের সমস্যা দূর হবে।
ডুমুরের আরো অনেক অনেক ধরনের উপকার রয়েছে যদি আপনি খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ডুমুর ফল রাখতে পারেন তাহলে আপনার অজানা রোগ দূর হবে। এবং ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে আপনি সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। তাই এই ডুমুর ফল প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। ডুমুর ফলের আশ্চর্য উপকারিতা প্রচুর পরিমাণে আছে যা বলে শেষ হবে না। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম কি্।
ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম
ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম কি এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন তাহলে ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে আসি।
ডুমুর ফল বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় কেউ কেউ রান্না করে খায়।আবার কেউ সবজি মত করে খায়। আবার কেউ কেউ এটি কাঁচায় চিবিয়ে খায়। এবং কেউ এটি সংরক্ষণ করার জন্য শুকিয়ে রেখে দেয় এরপর সারা বছর এটি খায়। এবং এটি পেকে গেলেও আপনি খেতে পারেন। সবথেকে যেইটা ভালো হবে সেটা হচ্ছে যে কাঁচাই চিবিয়ে খাওয়া। যদি আপনি ডায়াবেটিসের রুগী হন তাহলে প্রতিদিন সকালে চার থেকে পাঁচটি ডুমুর কাঁচা চিবিয়ে খাবেন।
এখন আমরা নতুন করে দেখতে পাই জুসের মেশিন উঠেছে। অর্থাৎ জুস বানানো মেশিন যদি এই ডুমুর কাঁচা ফল জুস বানিয়ে খেতে পারেন। তাহলে ভালো উপকার পাবেন। কিন্তু সব থেকে ভালো হয় রান্না করে বা চা চিবিয়ে খাওয়াটাই। কিন্তু আপনাকে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ডুমুর রাখতেই হবে। কারণ ডুমুর একটি উপকারী ফল ।এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে্। কি কি ধরনের ভিটামিন রয়েছে আমরা নিচের দিকে বিস্তারিত আলোচনা করব। জানতে হলে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ডুমুরে কি কি ভিটামিন থাকে।
ডোমারে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন খনিজ,, আস,, আমি ,,চর্বি,, শর্করা ,,ক্যালসিয়াম,, ভিটামিন বি ১,, ভিটামিন বি টু,, ভিটামিন সি,, ফাইবার,, হিমোগ্লোবিন,, আইরন,, আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। যদি আপনি প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এগুলো রাখতে পারেন তাহলে আপনার শরীর একদম সুস্থ ও শাবল থাকবে।
ত্বিন ফল কি ডুমুর ফল কে বলে
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন যে ত্বিন ফলকে কি ডোমার ফল বলে। তাহলে এর উত্তর হল বাংলাদেশের অনেক মানুষের ত্বিন ফলকে ডুমুর ফল হিসেবে ধরে। ত্বিন ফল একটু বড় সাইজের হয়ে থাকে। কিন্তু ডোমার ফল আমাদের দেশে একটা ছোট সাইজ অর্থাৎ একে ত্বিন ফল হিসেবে ধরা হয়। অনেক মানুষ ডুমুর ফলকে ত্বিন ফল বলে থাকে।
ডুমুর ফল কেন খাবেন?
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন যে ডুমুর ফল কেন খাব? আমরা সকলেই মনে করে থাকি এবং বলে থাকি যে ডুমুর ফল হচ্ছে তিন ফল। আর আপনারা সকলেই জানেন যে ত্বিন ফল নামে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে।
যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তারা যদি প্রতিদিন মধু দিয়ে ত্বিন ফল খায় অর্থাৎ ডুমুর ফল খায় তাহলে তাদের শারীরিক দুর্বলতা কেটে যাবে। এবং শরীরকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে। কারণ এই ফলের নাম কোরআনে বর্ণিত আছে। তাহলে বুঝতে পারছেন কতখানি শক্তিশালী এই ফল।
বর্তমানে ৩০ থেকে ৪০% নারীর মধ্য ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে এই ত্বিন ফল অত্যন্ত উপকারী। যদি কেউ প্রতিদিন তিন থেকে চারটা করে ত্বিন ফল অথবা ডুমুর ফল খায় তাহলে তার দৃষ্টিশক্তি এবং ক্যান্সার এর মত ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে এই ডুমুর ফল।
ডুমুর কিভাবে রান্না করে জেনে নিন।
প্রিয় পাঠক আপনি জানতে চেয়েছেন যে ডুমুর কিভাবে রান্না করে? চলুন তাহলে জেনে নিই
প্রথমে ডুমুর নিবেন। ডুমুরের সামনে পিছনে একটু করে কেটে নেবেন। কাটার পর ডুমুরকে চার ফাক করবেন। অর্থাৎ চার টুকরা করবেন। চার টুকরা করা হয়ে গেলে আপনি একটি বাটিতে পানি নিবেন। পানির মধ্যে কিছু লবণ এবং কিছু হলুদ দিয়ে ডুমুরকে ১০ মিনিট মত ভিজিয়ে রাখবেন। কারণ ডুমুরের ভিতর থাকা কষগুলো তাহলে বের হয়ে যাবে। দশ মিনিট পর ডোমেটিকে ভালোভাবে কচলিয়ে দুই থেকে তিনবার সাদা পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। সাদা পানিতে ধোঁয়া হয়ে গেলে পানি গরম করে ডুমুর গুলোকে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার পর পানি গুলো ফেলে দিয়ে তেলে ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
ভাজা হয়ে গেলে আপনাকে মসলা দিতে হবে। মসলা গুলো হলো.....
লঙ্কাগুঁড়ো পরিমাণ মতো দিতে হবে।
ধনিয়া গুড়া পরিমাণ মতো দিতে হবে।
লবণ পরিমাণ মতো দিতে হবে।
হলুদ পরিমান মত দিতে হবে।
আদা বাটা পরিমাণমতো দিতে হবে।
এবার আপনাকে এগুলো একসাথে মিকচার করতে হবে। পাতিলের মধ্যে তেল দিয়ে গরম করতে হবে মসলা গুলো। এগুলো গরম করা হয়ে গেলে অর্থাৎ মসলা তৈরি হয়ে গেলে তার মধ্যে হালকা টমেটো দিতে পারেন। না দিলেও সমস্যা নাই। মসলা তৈরি হয়ে গেলে তার মধ্যে এই ডুমুর দিয়ে দিতে হবে। তারপর কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে।
কিছুক্ষণ কশানোর পর তার মধ্যে পানি দিয়ে দিতে হবে। পানি দেওয়ার পর 10 থেকে 15 মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। ফোটানো হয়ে গেলে তার উপরে হালকা গরম মসলার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবে। তাহলে আপনার রেসিপি তৈরি হয়ে গেল।
শেষ কথাঃ ডুমুরের উপকারিতা ডুমুর খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষন ডুমুর ফলের উপকারিতা? ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম? ডুমুরের কি কি ভিটামিন থাকে/? ত্বিন ফল কি ডুমুর ফলকে বলে? ডুমুর ফল কেন খাবে? ডুমুর কিভাবে রান্না করে? এ সম্পর্কে আমরা উপরের দিকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি। যদি আপনি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই রান্না এবং কিভাবে ব্যবহার করে তা বুঝতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।