শিশুদেরে নিউমনিয়া হলে ৫ টি করনীয় এবং চিকিৎসা

নিউমোনিয়া এটি শিশুদের জন্য একটি মারাত্মক রোগ। বর্তমানে প্রায় শিশুদের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। তার মধ্যে নিউমোনিয়া।নিউমুনিয়াতে প্রায় বাংলাদেশে ১০০ ভাগের মধ্যে ২৫ ভাগ শিশু মারা যায়। কিন্তু মারা যাওয়ার কারণ হলো আমরা সচেতন না। চলুন তাহলে শিশুদের নিউমোনিয়া হলে পাঁচটি করণীয় এবং চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে আসি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

নিউমোনিয়াতে প্রায় সারা বিশ্বের শিশু আক্রান্ত হয়ে থাকে। এর ফলে অনেক শিশু মারা যায়। নিউমোনিয়া কেন হায় ? আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আজ আমরা এ আর্টিকেলের মধ্যে নিউমোনিয়া কেন হয়? এবং নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ! এবং নিউমোনিয়া হলে পাঁচটি করণীয় নিয়ে আলোচনা করব। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে নিউমোনিয়া হওয়ার পাঁচটি করনীয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে মুলার আলোচনায় যাওয়া যাক।

শিশুদের নিউমোনিয়া কেন হয়?

নিউমোনিয়া হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়া যদি আমাদের শরীরে চলে যায় এর ফলে নিউমোনিয়া হতে পারে। এবং যদি এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে তাহলে সেখান থেকে নিউমোনিয়া সৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ মূল কথা হলো যে নিউমোনিয়া বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, জীবাণু, থেকে হতে পারে। যদি কোন শিশু ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া , জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে থাকে, তাহলে তার ভিতরে নিউমোনিয়া হওয়া সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। আশা করি শিশুদের নিউমোনিয়া কেন হয় জানতে পেরেছেন।

শিশুদের নিউমোনিয়া হলে বোঝার উপায়

নিউমোনিয়ার কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। যদি আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হয় তাহলে আপনারা প্রথমে দেখবেন যে আপনার শিশু কি পরিমান নিঃশ্বাস নিচ্ছে। যদি সেই নিঃশ্বাসের বেগ অথবা গতি বেড়ে যায় তাহলে বুঝে নিবেন যে আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। এবং যদি আপনার শিশুর বুকের ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের সদ্ব করে অথবা শব্দ আসে তাহলে বুঝে নিবেন আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। একটি বিষয় রয়েছে হল বুকের পাঁজর ঢুকে যদি যায় অর্থাৎ ভেতরের দিকে চলে যায় তাহলে বুঝে নিবেন আপনার শিশু নিউমোনিয়া হয়েছে । যখন আপনার শিশু শ্বাস নেবে তখন দেখবেন যে বুক ফুলে ওঠার বদলে বুক ভিতর দিকে দেবে যাচ্ছে। তখন বুঝে নিবেন আপনার শিশু নিউমোনিয়া হয়েছে। যদি আপনার শিশু প্রতি মিনিটে সাত বারের বেশি শ্বাস নেয় এবং শ্বাস ছাড়ে তাহলে বুঝে নিবেন আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। 

শিশুদের নিউমোনিয়া হলে ৫ টি করণীয়

১.যদি আপনার বাচ্চা নিউমোনিয়া হয়ে থাকে তাহলে আপনারা বাড়িতে যে কাজটি করতে পারেন সেটি হল তুলসী পাতার রস খাওয়াতে পারে। যদি আপনারা প্রতি দিন তিন বেলা তুলসী পাতার রস গরম করে তার সাথে কিছু মধু দিয়ে মিশ্রণ করে আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন তাহলে আপনার বাচ্চার নিউমোনিয়া অথবা ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা আস্তে আস্তে চলে যেতে লাগবে।

২.আমরা বিভিন্ন কাজে বাইরে থাকি, অথবা বিভিন্ন নোংরা জিনিসপত্র লাড়াচাড়া করি। এর ফলে আমাদের হাতে প্রচন্ড পরিমাণে জীবাণু থাকে। তখন আমরা আমাদের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে অথবা আদর করি। এটি একেবারে নিষিদ্ধ। যদি আপনি বাচ্চাকে নিতে চান তাহলে অবশ্যই হাতমুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বাচ্চাকে নিবেন। তাহলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। আর যদি আপনার হাতে জীবাণু নিয়ে বাচ্চাকে আদর করেন এবং কোলে করেন তাহলে সেই জীবাণু যদি বাচ্চার ভিতরে চলে যায় তাহলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।

৩.যদি আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার শিশু নিউমোনিয়া হয়েছে, তাহলে আপনারা আদা চা খাওয়াতে পারেন। যদি কয়েকদিন আদা চা খাওয়ান, এর ফলে নিউমোনিয়া চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই যখনই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শিশু নিউমোনিয়া হয়েছে তখনই বাড়িতে আদা চা খাওয়াতে পারেন। এবং যদি সর্দি-কাশি গুলো পাঁচ দিনের বেশি হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

৪.নিউমোনিয়া হলে আপনারা একটি ইনজেকশন ব্যবহার করতে পারেন। নিউমোনিয়ার জন্য একটি আলাদা ইনজেকশন পাওয়া যায়। এই ইনজেকশনগুলো যদি আপনারা ব্যবহার করেন তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে নিউমোনিয়া চলে যাবে। এবং নিউমোনিয়া আর হবে না। তাই যদি আপনার শিশুকে নিউমোনিয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চান তাহলে আপনারা এসব ধরনের ভ্যাকসিন দিতে পারেন।

৫.যখনই আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার নিউমোনিয়া হয়েছে, এবং সেই নিউমোনিয়াটি সাত দিন অথবা পাঁচ দিনের বেশি হয়ে গেছে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। যদি সাথে সাথেই নিউমোনিয়া চিকিৎসা না নেন তাহলে এটি মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে। এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। আশা করি নিউমোনিয়া হলে পাঁচটি করনীয় জানতে পেরেছে।

নিউমোনিয়ার চিকিৎসা

নিউমোনিয়া যেসব চিকিৎসা দেওয়া হয় তার মধ্যে প্রথমে যে চিকিৎসাটির কথা বলা হয় সেটি হল এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন। যদি আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিনের হয়ে যায় তাহলে আপনার শিশুকে এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হবে। তাহলে আপনার শিশুর নিউমোনিয়া চলে যাবে। এবং নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার জন্য আপনারা একটি ইনজেকশন ব্যবহার করতে পারেন। যদি সেই ইনজেকশনটা ব্যবহার করেন তাহলে আপনার শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। আশা করি নিউমোনিয়া হলে কি চিকিৎসা করবেন তা জানতে পেরেছেন।

নিউমোনিয়া কিভাবে হয়?

নিউমোনিয়া হওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে,। তার মধ্যে প্রথমে রয়েছে জীবাণুর মাধ্যমে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। যদি আপনি আপনার সন্তানকে নোংরা জীবাণু হাতে স্পর্শ করেন এবং সেগুলো যদি তার ভেতরে চলে যায় তাহলে নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা বেশি। এবং যদি আপনি আপনার শিশুকে কোন খেলনা জিনিস দেন এবং সেগুলোতে যদি প্রচন্ড পরিমাণে জিবানু থাকে তাহলে এটি নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে শীতের দিনে নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদি আপনার ফ্লোর ভেজা ভেজা হয়ে থাকে এবং সেখানে যদি আপনার শিশুকে রাখেন তাহলে আপনার শিশু নিউমোনিয়া হতে পারে। কারণ যদি আপনার শিশুর এলার্জি থাকে তাহলে নিউমোনিয়া হতে পারে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

নিউমোনিয়া থেকে বাঁচার জন্য কি করা উচিত?

নিউমোনিয়া থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে যেসব কাজ করতে হবে তার মধ্যে প্রথম হল বাচ্চাকে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। অর্থাৎ কোন ধরনের নোংরা জিনিসপত্র খেলতে দেয়া যাবে না। এমন কি যদি আপনার হাতে নোংরা থাকে তাহলে কোন ভাবে বাচ্চাকে ছোঁয়া যাবে না। এবং বাচ্চাকে ঠান্ডা জায়গায় রাখা যাবে না। এবং শীতের দিনে বাচ্চাকে ভালোভাবে আগলে রাখতে হবে। দেখতে হবে তার জেনো ঠান্ডা না লাগে। এবং বাচ্চার যদি এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং বাচ্চার মাকে কোন ধরনের ঠান্ডা জিনিস খাওয়া যাবেনা, এবং বেশি পানি নাড়া যাবে না।

উপসংহার

শিশুদের নিউমোনিয়া হলে পাঁচটি করণীয় সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। সারা বিশ্বে প্রায় নিউমোনিয়ার জন্য অনেক শিশু মারা যাচ্ছে। যদি আমরা এগুলো আগে থেকে যত্ন নিই তাহলে আমাদের শিশু সুরক্ষিত থাকতে পারে। তাই যদি আপনি আপনার শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে চান তাহলে আমাদের এই টিপস গুলো অবলম্বন করতে পারেন। তাহলে আপনার শিশু সুরক্ষিত থাকতে পারে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন । ভালো লাগলে শেয়ার করুন। এবং অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url