হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় । রক্তে হিমোগ্লোবিন বিদ্ধির উপায়


 আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষকে রক্ত দিয়ে থাকি। কিন্তু রক্ত দেওয়ার সঠিক সময় কখনো এটা যানিনা। এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত হলে রক্ত দিতে হয় এ সম্পর্ক জানি না। তাই আজ আমরা রক্ত হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত থাকলে রক্ত দিতে হয়? তা এখন জানবো।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ এক একজনের একাদ রকম হয়ে থাকে। যেমন কারো কারো ক্ষেত্রে কমে থাকে। এবং কারো ক্ষেত্রে বেশি  হয়ে থাকে। কিন্তু কোনটি সঠিক সেইটি এখন আজ আমরা বলবো ।যদি  আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিলের পরিমাণ ঠিক আছে কি না তা জানব। তাই যদি আপনি হিমোগ্লোবিলের পরিমাণ কত হলে রক্ত দিতে হয়? এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

হিমোগ্লোবিন কাকে বলে?

হিমোগ্লোবিন একটি পদার্থ। যা আমাদের রক্তের মধ্যে থাকে। রক্তের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এই হিমোগ্লোবি যদি কারো রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে আসে তাহলে তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাবে। এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড গুলো তারা নির্গত করতে পারবে না। তাই যদি আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তাহলে অবশ্যই সেটিকে বাড়াতে হবে। এবং কিভাবে বাড়াবেন? কি করলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়বে? এবং কোন কোন খাবার খেলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়বে? এর সম্পর্কে আমরা নিচের দিকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।

আরো পড়ুন = কি খেরে রক্ত পরিস্কার হয় জেনে নিণ।

হিমোগ্লোবিনের কাজ কি?

হিমোগ্লোবিন এর কাজ মাত্র কয়েকটি রয়েছে। কিন্তু এর ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণে। হিমোগ্লোবিন এটি আমাদের অনেকেরই চেনা একটি নাম। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে এই হিমোগ্লোবিনের কাজটা কি? এবং এই হিমোগ্লোবিন কিভাবে কাজ করে? তা আমরা জানিনা। তাই যদি আপনি হিমোগ্লোবেন এর কাজ কি জানতে চান তাহলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

হিমোগ্লোবিন এটি রক্তের একটি উপাদান। হিমোগ্লোবিনের কাজ হলো যে রক্তের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে বিভিন্ন রগে এবং বিভিন্ন টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এবং কার্বন ডাই অক্সাইড পরিহার করে। হিমোগ্লোবিনের এটাই মূলত প্রধান কাজ। হিমোগ্লোবিনের আরো কিছু কাজ রয়েছে সেটি হল যে বিভিন্ন ফুসফুসের অক্সিজেন গুলো বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ তে সরবরাহ করে।এবং কার্বন ডাই অক্সাইড গুলো শরীর থেকে বের করে দেয়, মূলত হিমোগ্লোবিনের এটাই একটি বিশেষ বড় কাজ। হিমোগ্লোবিনের আরো কয়েকটি কাজ রয়েছে তা আমরা এখন জেনে নিব।

হিমোগ্লোবিনের প্রধানত কাজ সমূহঃ

  • হিমোগ্লোবিন রক্তে প্রোটিনের মাত্রা ঠিক সাহায্য করে।
  • হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে।
  • হিমোগ্লোবিন শরীরের জমা হওয়া বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস সেগুলো বের করতে সাহায্য করে।
  • যদি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে তাহলে রক্ত বৃদ্ধি করতে বেশ সাহায্য করে।
  • হিমোগ্লোবিন যদি রক্তে থাকে তাহলে বেশি রক্ত উৎপন্ন করতে সাহায্য করে।

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত হলে রক্ত দিতে হয়?

যাদের বিভিন্ন সময় উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় তারা রক্ত দিতে চাই। কিন্তু তার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত আছে তার এ সম্পর্কে জানে না। এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত হলে রক্ত দিতে হয়? সে সম্পর্কে জানে না । চলুন তাহলে আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে জেনে নি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত হলে রক্ত দিতে হয়। হিমোগ্লোবিন একটি মানুষের ক্ষেত্রে ১৪/ ১৭ এবং ১২/ ১৫ এটি হচ্ছে স্বাভাবিক।


রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে কি কি সমস্যা হয়?

যদি কারো রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তাহলে প্রথমে যে সমস্যাগুলো হয়, সেটি হল যে তার রক্ত নতুন করে তৈরি করতে পারে না। এবং বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন গুলো সরবরাহ করতে পারে না। এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে সে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা বোধ করে ।যেমন দুর্বল, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট ,মাথা ব্যথা, ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এবং বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া। এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যদি আপনার রক্ত হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে এসব সমস্যা দেখা দিবে।

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে কি হয়?

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা জানে না যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়? যদি আপনার শরীর হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়, তাহলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ক্লান্তিবোধ, মাথা ঘোরা, ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এবং যদি রক্ত হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। এবং এবং ফুসফুসের কার্বন ডাই-অক্সাইড গুলো বের করতে সাহায্য করে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হওয়ার কারণ কি?

রক্তে হিমোগ্লোবিনের  পরিমাণ কমে যাওয়ার বিভিন্ন  কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমে যে কারণগুলো রয়েছে সেটি হল যদি শরীরে আইরন, ভিটামিন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, এবং আরো বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান গুলো কমে যায়, তাহলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যেতে থাকবে।

এবং যদি কোন ব্যক্তির ক্যান্সারের মতো সমস্যা থাকে তাহলে তার রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দিন দিন কমে যেতে পারে। যেমন বেস্ট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার থাকে তাহলে তার রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দিন দিন কমে যেতে থাকবে। এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতির কারণে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হয়ে যায়।

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হলে কি খাওয়া উচিত?

যদি আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার শরীরের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তাহলে আপনারা বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খেয়ে আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। 

যেমন কমলা ,লেবু, টমেটো, আপেল, ডালিম, আঙ্গুর ইত্যাদি ধরনের ফাইবারযুক্ত খাবার খেয়ে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। আপনাকে দেখতে হবে কোন কোন খাবারে ফাইবার রয়েছে। যদি আপনি ফাইবার যুক্ত ক্যালসিয়ামযুক্ত আয়রনযুক্ত খাবার বেশি করে খান তাহলে আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়বে। তাই চেষ্টা করবেন ক্যালসিয়ামযুক্ত বা বিভিন্ন ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়ার। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।


কোন কোন রোগের জন্য হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়

এখন আমরা জানব যে কোন কোন রোগের কারণে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়? বিভিন্ন ধরনের রোগ রয়েছে। যেগুলো হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমাতে বেশ সাহায্য করে।তার মধ্যে একটি হল ক্যান্সার। যদি আপনার শরীরে ক্যান্সার থাকে তাহলে দিন দিন হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাবে। এবং যদি আপনার পাইলসের সমস্যা থাকে তাহলে আস্তে আস্তে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাবে। 

বং যদি আপনার টিউমারের সমস্যা থাকে অথবা টিউমার হয়ে থাকে তাহলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মাধ্যমে আপনার হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ আস্তে আস্তে কমে যাবে। এবং যদি আপনার এইডস রোগ থাকে তাহলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাবে। এবং শেষে যেটি রয়েছে সেটি হল যদি আপনার আইরন এর ঘাটতি থাকে শরীরে, তাহলে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হলে কোন কোন রোগ হয়?

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ যদি কমে যায়, তাহলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এবং বিভিন্ন ধরনের জটিল জটিল রোগ দেখা দেয়। তার মধ্যে আমরা কয়েকটি রোগ নিয়ে আলোচনা করব। যেগুলো রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে দেখা দেয়। প্রথমে যে রোগটি হয় সেটি হলো মাথা ঘোড়া, এবং মাথাব্যথা, যদি আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তাহলে এ সমস্যাটি দেখা দিবে। এবং দুই নাম্বারে যেটি রয়েছে সেটি হল শ্বাসকষ্ট হয়, এটি একটি মারাত্মক রোগ। যদি আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তাহলে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিবে। যা অনেক কষ্টদায়ক রোগ।

যদি আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায় তাহলে চোখে কম দেখা, ঘুম না হওয়া, এবং হাত পা ব্যথা, আরও ইত্যাদি ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। তাই যদি আপনারা এ ধরনের সমস্যাগুলো দূর করতে চান? তাহলে অবশ্যই আমাদের  এই নিয়মগুলো মানতে পারেন।

রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ

কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের বিভিন্ন ধরনের ফলমূল বা বিভিন্ন ধরনের আয়রন যুক্ত খাবার খেয়ে তাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে না ।তাই তাদের জন্য বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। সেটি হলো যে ওষুধ। যদি কোনভাবেই রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি না করা যায়, তাহলে ওষুধ সেবন করে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। 

তাই যদি আপনি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য ওষুধ খেতে চান? তাহলে আপনাদের সামনে আমরা কয়েকটি ওষুধ এর নাম বলব। যেগুলো খেয়ে আপনি আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারেন ।এবং সুস্থ থাকতে পারেন। চলুন তাহলে সেই ওষুধের নাম গুলো জেনে নিন।

প্রথমে যে ওষুধটি রয়েছে সেটি হল tb.memorif.  যদি আপনার নিয়মিত খান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খান তাহলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে আপনাদের শরীরের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

উপসংহার

আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করলাম যে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত হলে রক্ত দেওয়া যায়? এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। এবং একটি কথা মনে রাখবেন যে যদি আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক না থাকে তাহলে কোন ভাবেই আপনি সুস্থ থাকতে পাবেন না। এবং রক্ত দিতে পারবেন না। তাই রক্তের পরিমাণ ঠিক রাখুন। এবং নিজে সুস্থ থাকুন। এবং আর্টিকেলটি শেয়ার করে অন্যকে সুস্থ থাকার সুযোগ করে দিন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url