সিজারের পর রোগীর খাবার তালিকা । সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না
আমাদের মাঝে অনেকেই মা-বোন আছে যারা বিভিন্ন খাবার খেয়ে থাকে। এর ফলে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এবং কাঁটা স্থানে সমস্যা দেখা দেয়। তাই আজ আমরা বলবো যে কোন কোন খাবার খেলে রোগীর কাঁটা তাড়াতাড়ি শুকায়। এবং কোন কোন খাবার খেলে রোগীর সমস্যা হয়? যদি আপনারা এই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
সিজারের পর রোগীর খাবার তালিকা
এখন আমরা দেখব যে সিজারের পর কোন কোন খাবার খাওয়ালে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয় এবং রোগী সহজে শক্তি পাই? চলুন তাহলে সেসব খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।- প্রথমে আমরা যে খাবারটি কথা বলব, সেটি হলো লেবু। যদি কোন ব্যক্তি কাঁটা স্থান থাকে, এবং সে যদি নিয়মিত লেবু খায়, তাহলে তার কাঁটা স্থান কয়েকদিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে। এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবার একটু বেশি করে খেতে হবে।
- কমলালেবু, রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী। যদি সিজারের রোগী অথবা কখনো অপারেশনের রোগী হয়, তাহলে তাদেরকে বেশি করে কমলা লেবু খাওয়ানো উচিত। কারণ কমলালেবু ভিটামিন সি যুক্ত রয়েছে। এর ফলে যে কোন ধরনের কাঁটা শুকাতে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে।
- ঘা শুকানোর জন্য অথবা কাঁটা শুকানোর জন্য বেশ ভূমিকা পালন করে মালটা।যদি কোন রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মালটা খাওয়ানো যায়, তাহলে তার কাটা স্থান দ্রুত শুকিয়ে যাবে। এবং তা সুন্দরভাবে চামড়ার সঙ্গে আরেকটি চামড়া ভালোভাবে মিলে যাবে।
- রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি খাওয়াতে হবে। কারণ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ দূর করতে পারে। এবং বিশেষ করে কাটা জায়গা শুকাতে বেশ সাহায্য করে। আমরা সকলেই জানি যে শাকের উপরে আর তেমন কোন খাবার নেই। যেসব খাবারে আয়রন থাকে। তাই রোগীকে প্রচুর পরিমাণে শাক খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।
- রোগীকে প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। যেসব খাবারে প্রোটিন রয়েছে তার মধ্যে হল, সামুদ্রিক মাছ, অথবা ছোট মাছ, দুধ, ডিম, ইত্যাদি এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। যদি আপনারা এগুলো রগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াতে পারেন, তাহলে রোগীর উপকার হবে।
- বিশেষ করে রোগীকে আপনারা ছোলা বা ডাল খাওয়াতে পারেন। যদি ছোরা বা ডাল খাওয়ান তাহলে রোগীর বিভিন্ন উপকার হবে। কারণ ডাল একটি বিশেষ উপকারী খাবার। চাইলে আপনারা এগুলো গুগলের সার্চ করে দেখতে পারেন ডালের উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে বুঝতে পারবেন ডাল রোগীর জন্য কতখানি উপকারী।
- যদি কোন রোগীকে সিজার করা হয় তাহলে তাকে কয়েক দিন মারি ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ একেবারেই নরম ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। তার সঙ্গে কোন ধরনের তরকারি ব্যবহার করবেন না। যদি কোন ধরনের তরকারি ব্যবহার করেন অথবা ঝাল তরকারি , তাহলে রোগীর সমস্যা হতে পারে।
- রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে গরুর দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। যদি আপনারা পর্যাপ্ত পরিমাণে গরুর দুধ খান তাহলে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। এবং পা হাতে শক্তি পাবে। তাই যদি রোগীকে সুস্থ রাখতে চান তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ খাওয়ান।
- ডিম একটি প্রোটিনের বিশাল বড় উৎসব। ডিম যদি কোন ব্যক্তিকে খাওয়ানো যায় তাহলে তার প্রোটিনের অভাব হবে না। তাই যদি রোগীকে দ্রুত সুস্থ করতে চান তাহলে অবশ্যই দুধ, ডিম খাওয়াবেন। দুধ, ডিম একটি প্রোটিনের বিশাল বড় উৎসব। ক্যালসিয়াম এবং বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। তাই এগুলো খাওয়াতে পারেন।
- আপনারা চাইলে রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঝিনুক খাওয়াতে পারেন । কারণ ঝিনিকে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক রয়েছে। এবং জিংক এর কাজ হল যে মানবদেহের শক্তি যোগানো। তাই যদি কোন রোগীকে আপনারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঝিনুক খাওয়াতে পারেন তাহলে সেই রোগী দ্রুত চলাফেরা করতে পারবে।
সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবেনা?
- এখন আমরা জানবো যে সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবেনা? বিভিন্ন খাবার রয়েছে, যেগুলো খাওয়ার পরে শিশু এবং মায়ের সমস্যা হতে পারে। তাই এখন আমরা বলব যে সিজারের পর কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না।
- প্রথমে যে খাবারটি রয়েছে সেটি হল ঝাল জাতীয় খাবার কোনভাবেই মাকে খাওয়ানো যাবে না । কারণ যদি সে ঝাল জাতীয় খাবার খায়, তাহলে তার পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং যদি তার বাচ্চা তার স্তনের দুধ পান করে তাহলে সেই বাচ্চার ও সমস্যা হতে পারে। তাই ঝাল জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন।
- বিশেষ করে ঠান্ডা জাতীয় খাবার প্রত্যেকটি মায়ের জন্য এড়িয়ে যাওয়া উচিত। কারণ যদি আপনার বাচ্চাকে আপনার বুকের দুধ খাওয়ান, এবং আপনি যদি কোন ঠান্ডা জিনিস পান করনে, তাহলে আপনার বাচ্চাকে ঠান্ডা লাগতে পারে। এবং এটি সম্ভাবনা বেশি।তাই ঠান্ডা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
- অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জিনিস আপনাদেরকে খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জিনিস খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ভাজাপোড়া জিনিস থেকে দূরে থাকবেন।
- একটি সিজার রোগীর জন্য যেসব খাবার বর্জন করা উচিত তার মধ্যে রয়েছে কোকাকোলা্। অথবা কোমল পানীয় জাতীয় খাবার এসব পরিহার করা্। যদি আপনারা এই কমল জাতীয় প্রাণী গুলো খান তাহলে আপনাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এবং তার সঙ্গে বাচ্চারও সমস্যা হতে পারে। তাই এসব খাবার থেকে দূরে থাকবেন।
- বিশেষ করে অনেক মেয়ে আছে যাদের ধূমপান করার অভ্যাস রয়েছে। তাদেরকে অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চা পেটে থাকা থেকে নিয়ে বাচ্চা বড় হওয়া পর্যন্ত তাকে ধূমপান পরিহার করতে হবে। যদি সে ধূমপান পরি হার না করে তাহলে সে সমস্যাগুলো বাচ্চার মধ্যে দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই একটি মায়ের ধূমপান করা উচিত নয়।
- যদি কোন খাবার দুর্গন্ধ হয়ে যায়, এবং সেই খাবার যদি কোন রোগই খায়, তাহলে তার সমস্যা হবে। এবং তার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চারও সমস্যা হবে। তাই দুর্গন্ধ জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন। এবং যেগুলো খাবার খাটটা হয়ে গেছে অথবা হালকা গ্যাস হয়ে গেছে সেগুলো খাবার বর্জন করতে হবে।
- কোন কোন ডাক্তাররা বলে থাকে যে ডিম দুধ খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু বিভিন্ন গবেষকরা বলে থাকে যে সিজারের পর এবং কোন অপারেশনের পর দুধ ডিম পর্যাপ্ত পরিমাণে খায়, তাহলে সেই রোগীর কোন ধরনের সমস্যা হবে না। এবং সেই রোগীর দ্রুত সুস্থ হবে।
সিজারের পর কতদিন বিল্ডিং হয়?
সিজারের পর এক একজনে একার রকম ভাবে ব্লিডিং হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে সিজারে পর প্রসাবের রাস্তা দিয়ে কোন ধরনের তরল পদার্থ এবং গন্ধ জাতীয় বের হতে পারে। এবং তার সঙ্গে কিছু বিল্ডিং হতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত ব্লিডিং অথবা সাদাস্রাব দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঘাবড়ানোর কোন প্রয়োজন নেই। যদি এসব সমস্যা দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে
সিজারের পর ব্যথা কারো কারো ক্ষেত্রে সাত দিন থাকে। এবং কারো কারো কাছে দশ দিন থাকে। যদি সিজারে পর দেখেন যে আপনার ব্যথা ১০ দিনের ওপর হয়ে যাচ্ছে তাও ভালো হচ্ছে না, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং চিকিৎসক তা খতিয়ে দেখবে যে আপনার সমস্যা কি? যদি আপনার ব্যথা ১০ দিনের উপরে হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
সিজারে পরে ইনফেকশন কেন হয়?
বিভিন্ন অসচেতনতার কারণে আমাদের এই সিজার ফর ইনফেকশন দেখা দেয়। যেমন কোন ব্যক্তি যদি অপরিষ্কার হাতে সে সিজার রোগী ওপর স্পর্শ করে , এবং যদি তার হাতে জীবাণু থাকে এবং সেই জীবাণুগুলো যদি কাটা স্থানে চলে যায় তাহলে সেখানে ইনফেকশন হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। এবং রোগী যেই রুমে থাকবে সেই রুম যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না হয় তাহলে সেই রোগীর কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং যদি কোন রোগী বারবার তার কাটা স্থানে উপর হাত দেয়, এর ফলে যদি তার হাতে জীবাণু থাকে, তাহলে এটি দ্রুত তার কাটা স্থানে ইনফেকশন হতে সাহায্য করে। এবং যদি কোন অপরিষ্কার কাপুর ব্যবহার করা যায় তাহলে কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হতে পারে। তাই যদি আপনার ইনফ্যাকশন থেকে বাঁচতে চান তাহলে এই টিপসগুলো মেনে চলতে পারেন।
সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়
যদি কোন রোগীর সিজারের পর ইনফেকশন হয় তাহলে তার বিশেষ কয়েকটি করণীয় রয়েছে। বর্তমানে আমাদের এই দেশের সিজারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে অনেক মা মৃত্যুর মুখে চলে যাচ্ছে। কারণ সেই কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার কারণে্। তাই চলুন আমরা জেনে নেই সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয় গুলো কি কি?
- যদি কারো ক্ষেত্রে সিজারের পর ইনফেকশন দেখা দেয় এবং এর লক্ষণ গুলো বুঝতে পারেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এবং যত সম্ভব আপনার সেখানে ভায়োডিন অথবা ডেটল দিয়ে পরিষ্কার করবেন। কোনোভাবেই কাটা স্তানের উপর হাত দিবেন না।
- যদি কোন সিজার রোগী ইনফেকশন দেখা দেয় তাহলে দ্রুত তাকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। তারমধ্যে হলো লেবু, কমল লেবু ইত্যাদি এসব খাবার খাওয়াতে পারেন। যেগুলো খাওয়ার ফলে তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাবে।
- যদি সিজারের রোগীর কাঁটাস্থানে ইনফেকশন এর লক্ষণ গুলো দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই তাকে বেশি পরিমাণে পানি খাওয়াবেন। কারণ তার প্রসাব টা ঠিক রাখতে হব ।তাহলে রোগের জন্য ভালো হবে।
- যদি সিজারের জায়গায় ইনফেকশন এর লক্ষণ গুলি দেখা দেয় তাহলে সেখানে কোনোভাবে হাত দিবেন না। কারণ হাতে থাকা জীবাণু যদি সেই কাটার পর দেন তাহলে সেটি আরো মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে।
- যদি সিজারের রোগীর কাঁটাস্থানে ইনফেকশন দেখা দেয় তাহলে সেখানে কোনোভাবেই সাবান ব্যবহার করবেন না। কারণ সাবান ব্যবহার করার ফলে ইনফেকশনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সিজারের কতদিন পর ভারী কাজ করা যায় ?
আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ রয়েছে যারা সিজারের কিছুদিন পর পরে ভারী কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। এবং তাদের কাটার স্থানটি প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা সৃষ্টি হয়। এর ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। সিজারের পর ভারী কাজ করার নিয়ম হলো যে ৬ থেকে ৭ মাস পর। যদি কোন ব্যক্তি সিজার করার ৬ থেকে ৭ মাস পর ভারী কাজ করে তাহলে তার কোন ধরনের সমস্যা হয় না। এবং যদি কোন ব্যক্তি এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই ভারী কাজ করা শুরু করে, তাহলে পরবর্তী তার ব্যাথাটি থেকে যেতে পারে। এবং সেখানে পরবর্তীতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
উপসংহার
আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মধ্যে জানতে পেরেছি যে সিজার উপর রোগীর খাবার তালিকা এবং সে যারা পর কি কি খাওয়া যাবেনা এ সম্পর্কে। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। আরেকটি কথা মনে রাখবেন যে রোগীকে ভিটামিন সি যুক্ত এবং ক্যালসিয়াম প্রোটিন আয়রনযুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়াতে হবে। যেন রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় । ভালো লাগলে এটি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং সকলকে জানার সুযোগ করে দিন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।