টনসিল ফোলা কমানোর ৮ টি উপায় । টনসিল ফোলা কমানোর ঔষধ এবং চিকিৎসা

 টনসিল একটি জটিল রোগ। যা গলা এবং মুখে হয়ে থাকে। এবং ফুলে যায় এর ফলে গলা ব্যথা জ্বর জ্বর ভাব, এসব সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই আজ আমরা বলবো টনসিলের ফলা কিভাবে দূর করা যায়? এবং এর ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব?

যাদের টনসিলের সমস্যা হয়েছে তারাই জানে যে টনসিলের ব্যথা কেমন? টনসিল যদি আপনার ফুলে যায় তাহলে আপনাকে যেসব কাজ করতে হবে তা আমরা নিচে উল্লেখ করব। টনসিল একটি মারাত্মক ওষুধ। যদি  টনসিল দীর্ঘদিন ধরে হয়ে থাকে, এর ফলে ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। তাই টনসিলের চিকিৎসা এবং টনসিলের ফোলা কিভাবে দূর করতে হয়? তা আমরা আজ আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। যদি জানতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

টনসিল কেন হয়?

টনসিল হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। টনসিল মূলত গলায় যদি বারবার সংক্রমণ রোগ হয়, অর্থাৎ ভাইরাসজনিত রোগ হয়।  টনসিল দেখা দেয় বিশেষ করে ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, জ্বর, ইত্যাদি এসব থেকে সৃষ্টি হয়। এর ফলে শ্বাস নেওয়া এবং গলা ব্যথা সৃষ্টি হয়। যদি কোন বাচ্চার ঠান্ডা লাগে তাহলে অবশ্যই তার মা কে সচেতন হতে হবে। কোন ধরনের পানিঘাটা যাবে না। যদি কোন ধরনের বেশি পরিমাণে পানি নাড়ে  এবং বাচ্চাকে ঠান্ডা জায়গায় রাখা যায়, তাহলে এই টনসিলের সমস্যাটা আস্তে আস্তে দেখা দিবে। এবং কিছুদিনের মধ্যেই ফুলে যাবে। যদি এই টনসিল কিছুদিনের মধ্যে না ভালো করা যায়, তাহলে এটা আস্তে আস্তে ক্যান্সারের রূপ ধারণ করতে পারে। কিন্তু ঘাবরানোর কোন কারণ নেই। এটি ওষুধ দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।

টনসিল ফোলা কমানোর ৭ টি উপায়

১.এখন আমরা জানবো যে টনসির ফলা কমানোর ৭ টি উপায় সম্পর্কে। যদি কারো টনসিল ফুলে যায়, তাহলে প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। যদি আপনারা এভাবে নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করেন তাহলে টনসিল ফলা কমে যাবে।

২.আপনারা  গরম পানি এবং লবণ একসঙ্গে যদি মিশিয়ে গড়গড়া করেন, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই টনসিল ফোলা দূরে চলে যাবে। কিন্তু আপনাকে একটি কথা মনে রাখতে হবে, টনসিল যদি ফুলে যায় তাহলে কোনভাবেই ঠান্ডা জিনিস খাওয়ার খাওয়া যাবেনা। এবং ঠান্ডা জায়গায় থাকা যাবে না। আর বিশেষ করে পানি কম নাড়তে হবে। তাহলে কিছুদিনের মধ্যে টনসিল ফোলা আস্তে আস্তে কমে যেতে লাগবে।

আরো পড়ুন = মাথা ভারি লাগার কারন জেনে নিণ।

৩.টনসিল ফোলা কমানোর জন্য আপনাকে প্রতিদিন টনসিলের ওপরে হালকা গরম কাপড় দিয়ে শেখ দিতে হবে। যদি এভাবে আপনারা পাঁচ থেকে ছয় মিনিট করে, হালকা গরম শেখ দেন তাহলে টনসিল ফোলা কমে যাবে। এবং টনসিলের ব্যথাটা আস্তে আস্তে কমে যাবে। তাই যদি টনসিলের ব্যথা কমাতে চান তাহলে অবশ্যই হালকা গরম কাপড় নিয়ে শেখ দিতে পারেন।

৪.টনসিল ফোলা  কমানোর জন্য আপনাকে প্রতিদিন রাত্রে চা খেতে হবে। এবং সকালে যদি গরম গরম চা  খান তাহলে টনসিলের ব্যথা আস্তে আস্তে চলে যাবে। এবং তার সঙ্গে আপনারা উপরের সব কয়টি টিপস ব্যবহার করবেন। তাহলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে টনসিল খোলা দূর হয়ে যাবে।

৫.টনসিল ফলা কমাতে গেলে আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হল হালকা গরম পানি নিতে হবে। এবং তার সাথে কিছু লবণ নিতে হবে। এবং তার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে লেবুর রস দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। যদি আপনারা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় মিনিট করে লেবুর পানি এবং লবণ দিয়ে গড়গড়া করেন, তাহলে মাত্র দুই দিনের মধ্যেই আপনাদের টনসিল ফোলা  এবং গলার ব্যথা দূর হয়ে যাবে।

৬.আপনারা একটি গ্লাসে কুসুম কুসুম গরম পানি নিবেন। এবং তার মধ্যে কয়েক ফোটা মধু দিয়ে দিবেন। যদি মধু দেওয়া হয়ে যায় তাহলে তার মধ্যে কিছু লবণ দিয়ে আপনারা প্রতিদিন গড়গড়া করতে পারেন। এবং তার সঙ্গে খেয়ে নিতে পারেন। যদি এভাবে আপনারা চার থেকে পাঁচ দিন ব্যবহার করেন তাহলে পুরোপুরি ভাবে টনসিল ফোলা দূর হয়ে যাবে।

৭.টনসিল ফোলা  কমানোর জন্য আপনারা আদা চা খেতে পারেন। যদি আপনার নিয়মিত আদা চা খান, তাহলে আপনাদের টনসিলা তিন দিন এর মধ্যে কমে যাবে। এবং তার সাথে উপরে সব কয়টি টিপস ব্যবহার করতে হবে। তাহলে টনসিল পুরোপুরিভাবে নিরাময় হয়ে যাবে। আমরা কিছু টনসিলের ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব । যা ব্যবহার করলে কমে যাবে।

৮.টনসিল আরেকটি উপায়ে ভালো করা যায়, সেটি হল ওষুধ দিয়ে। যদি আপনারা টনসিলের ওষুধ খান তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই টনসিল চলে যাবে। সেই টনসিলা এর ঔষুধ এর নাম আমরা নিচের দিকে উল্লেখ করে দিব।  আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেই ওষুধটি খেতে পারে।

বছরে দুই তিনবার টনসিল হলে করণীয় কি?

কোন কোন ব্যক্তি আছে অথবা শিশু আছে যাদের বছরে দুই তিনবার টনসিল হয়। বর্তমানে টনসিল কিন্তু এটি বয়সের উপর নির্ভর করে না। যে কারো হতে পারে টনসিল। এই টনসিল যদি আপনার বছরে ৩ বার বা চারবার এরকম হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটিকে অপারেশন করতে হবে। যদি সেটি অপারেশন না করা যায় তাহলে দিন দিন বাড়তেই থাকবে। এবং আপনার সমস্যা করবে। আর অপারেশন করলে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। তাই যদি আপনার বছরে ২-৩ বারের বেশি টনসিল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই অপারেশন করতে হবে।

এবং যদি আপনার বছরে দুইবার হয় তাহলে আপনাকে ডাক্তাররা আপনাকে এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দিতে পারে। এই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে টানসিল চিকিৎসা করা হয়। তাই যাদের দুইবারের বেশি বছরে টনসিল হয় তারা অবশ্যই এটি ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অপারেশন করানোর চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনারা পুরোপুরিভাবে সুস্থ হবেন।

টনসিল হলে কি কি সমস্যা হয়?

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা টনসিল হলে কি কি সমস্যা হয়? এ সম্পর্কে জানেনা। চলুন তাহলে এখন আমরা সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। টনসিল হলে আপনার প্রধানত যে কয়েকটি সমস্যা হবে তার মধ্যে একটি হলো গলা ব্যথা। গলার স্বর ভেঙ্গে যাওয়া। শ্বাসকষ্ট। কোন খাবার ভালোভাবে না গিলতে পারা। এবং কানে ব্যথা ইত্যাদি ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। টানসিল ভালো করতে আপনার অবশ্যই ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। এবং আমরা নিচে কিছু ওষুধের নাম বলবো এগুলো আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারেন।

টনসিলের চিকিৎসা কি?

চিকিৎসক মূলত টনসিলের দুইটি চিকিৎসা দিয়ে থাকে। প্রথমে যে চিকিৎসাটি দেওয়া হয় টনসিলের  সেটি হল যে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট। যদি আপনার টনসিল বছরে ১ বার ২ বার হয় তাহলে এই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে টনসিলের চিকিৎসা করা হয়। এবং যদি বছরে তিন থেকে চারবার হয়, তাহলে এটি চিকিৎসকেরা অপারেশনের জন্য বলে এবং অপারেশন করার ফলে  টনসিল ভালো করা হয়। আশা করি টনসিলের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

টনসিল ফোলা কমানোর ওষুধ

যদি আপনার গলার টনসিল প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা করে। তাহলে আপনারা এন্টিবায়োটিক খাবেন। বাজারে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়। কিন্তু তার মধ্যে সবথেকে ভালো এন্টিবায়োটিক এর নাম  আমরা বলব। চলুন তাহলে জেনে নিন। বাজারের সবথেকে ভালো অ্যান্টিবায়োটিক এর নাম হলো ফিউরোক্ল্যাভ250, এই ট্যাবলেটটি খেতে পারেন। এটি দিনে দুইবার খেতে হবে, মূলত ছয় দিন। এ ওষুধটি যাদের 50 কেজির নিচে  ওজন তারা  খাবেন। যাদের ৫০ কেজির ওপরে ওজন রয়েছে তারাfuroclav500, এই ওষুধটি খেতে পারেন।

টনসিল হলে কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না?

টনসিলের ক্ষেত্রে আমাদের যে সব ভুল করে থাকি সেটি হল যে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে ফেলি। যেগুলো টনসিল হলে খাওয়া উচিত নয়। চলুন তাহলে আমরা জেনে নেই কোন কোন খাবার টনসিল হলে খাওয়া উচিত নয়? যে খাবারটির কথা রয়েছে সেটি হল কোন ধরনের ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। যদি ঝাল জাতীয় খাবার খান তাহলে টনসিলের কাছে ইনফেকশন হতে পারে। এবং আপনাকে দুধ, চিনি, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়ো, এক কথায় ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। এর ফলে টনসিল পেকে যেতে পারে। আর যদি টনসিল একবার পেকে যায় তাহলে সেটিকে অপারেশন করতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

টনসিল হলে কি করা উচিত

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা টনসিল হলে কি করবে তা সম্পর্কে কিছুই জানে না। আপনাকে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল যে লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। এবং তার সাথে আলাদা খেতে হবে। যদি দেখেন যে টনসিল ৫ দিনের বেশি হয়ে যাচ্ছে এবং ভালো হয় না।  তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং যদি টনসিল প্রথমে দেখা দেয় তাহলে আপনার নাপা খেতে পারেন। এবং যদি নাপা কোন ধরনের কাজ না করে তাহলে অবশ্যই ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যে কোন ওষুধ খেতে হবে।

উপসংহার

আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি যে, টনসিল ফোলা কমানোর ৮ টি  উপায় এবং টনসিল ফলা কমানোর ওষুধ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন এবং বিস্তারিত জানতে পারেন, তাহলে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন। আরেকটি কথা হলো টনসিল যদি প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা করে এবং অনেকদিন কারা হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং যদি চিকিৎসকের পরামর্শ না নেন তাহলে টনসিল পেকে গেলে এটি বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। এমনকি অপারেশন করতে পারে। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url