হাম রোগের ভাইরাসের নাম - হাম ভাইরাসজনিত রোগ

হাম রোগের ভাইরাসের নাম হলো মিজল্‌স মর্বিলিভাইরাস। হাম ভাইরাসজনিত রোগ, তাই হাম রোগের ভাইরাসের নাম জেনে রাখা উচিত। হাম কেন হয়? বা হামের টিকার নাম কি? সে সম্পর্কে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। আর হাম রোগের ভাইরাসের নাম ইতোমধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে। 


    হাম রোগের ভাইরাসের নাম - হাম ভাইরাসজনিত রোগ

    হাম ভাইরাসজনিত রোগ এবং এই রোগটি খুব দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে। যে ভাইরাসের কারণে এই রোগটি হয় অর্থাৎ হাম রোগের ভাইরাসের নাম রুবেলা। এই ভাইরাসটির বৈজ্ঞানিক নাম হলো মিজল্‌স মর্বিলিভাইরাস। প্যারামক্সিভাইরাস গোত্রের এই ভাইরাসটি মর্বিলিভাইরাস শাখার অন্তর্গত। এই ভাইরাসটি সংক্রমণ এরপর সর্বপ্রথম শ্বাসনালীতে আক্রমণ করে এরপরে রক্তের মাধ্যমে দেহের সর্বাংশে ছড়িয়ে পরে।

    এই ভাইরাসের ব্যাপারে সর্বপ্রথম বিস্তারিত বিবরণ দেন পারসিক চিকিৎসক আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া আল রাজি। তিনি গবেষণা করে এই ভাইরাসটি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে তা বই আকারে জনগণের সামনে তুলে ধরেন। 

    পরবর্তীতে ১৯৫৭ সালে ফ্রান্সিস হোম নামের আরেক জন চিকিৎসক হামের জীবাণু সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং১৯৪৪ সালে মার্কিন চিকিৎসক জন এন্ডারসন ও টমাস পিবলস একজন হাম আক্রান্ত রোগীর শরীর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে সেই রক্ত থেকে হামের জীবনকে আলাদা করতে সক্ষম হন।

    হামের ভাইরাসটি হলো মূলত ঋণাত্মক-দিকমুখী, অখন্ডিত একসূত্রবিশিষ্ট এবং আবরণ বিশিষ্ট একটি আরএনএ ভাইরাস। এই ভাইরাসটির অনেকগুলো প্রকরণ থাকলেও বর্তমানে এই ভাইরাসের ৬টি প্রকার সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কাছে তথ্য রয়েছে এবং মানবজাতির মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে। সাধারণভাবে হাম ভাইরাসের বাহক একমাত্র মানুষ মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীর হয়না।

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।

    হাম কেন হয়? - হাম কি ছোয়াছে?

    হাম কেন হয়? এবং হাম কি ছোয়াছে? তা নিচে তুলে ধরা হলো। হাম রোগ হওয়ার পেছনে রুবেলা ভাইরাস দায়ী। হাম হলো একটি ছোঁয়াচে রোগ যা এক ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তির মাঝে সংক্রমিত হতে পারে হাঁচি-কাশি এমন কি কথা বলার মাধ্যমে এই রোগটি একজনের থেকে আরেকজনের কাছে স্থানান্তরিত হতে পারে। 

    তাই হাম রোগ দেখা দিলে অবশ্যই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা থাকতে হয়। হাম রোগ এতটাই সংক্রামক যে হাম আক্রান্ত রোগী কোন জায়গায় উপস্থিত থেকে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে সেখানে একজন সুস্থ ব্যক্তি শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করলেও হাম রোগের আক্রান্ত হতে পারে। হাম কেন হয়? এবং হাম কি ছোয়াছে? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। 

    হাম রোগের সাথে ভিটামিন এ এর একটি সম্পর্ক রয়েছে বিশেষ করে কোন ব্যক্তির যদি হাম রোগ হয়ে যায় এবং তার শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ' না থাকে তাহলে রোগীর অবস্থা খুবই জটিল হতে পারে। কেননা রক্তস্বল্পতা হাম রোগের অন্যতম একটি কারণ। তাই অবশ্যই সব সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে যদি আপনি নিয়মিত ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খান তাহলে হাম রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারেন।

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি? আরো বিস্তারিত জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন। 

    হাম হলে কি খেতে হবে? - হাম হলে কি করনীয়?

    হাম হলে কি খেতে হবে? এবং হাম হলে কি করনীয়? তা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে। হাম হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং দেখতে হবে যে কোন পর্যায়ের হাম। কেননা হামের অনেক পর্যায়ে রয়েছে। অনেকেই অবহেলা করে থাকেন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি হন মূলত এটা ঠিক নয় শুধু হওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা গ্রহণ করলে হাম তেমন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে কিন্তু যদি আপনি অবহেলা করেন তাহলে কিন্তু হাম এর প্রভাব অনেক বেশী ক্ষতি করতে পারে।

    আমি আক্রান্ত হলে সেই রোগীকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং একটু বর্বর ভেজা তোয়ালে দিয়ে তার শরীর মুছে দিতে হবে কেননা হামে আক্রান্ত রোগীকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে আমি আক্রান্ত রোগীর জ্বর যদি বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে তাহলে বমিও হতে পারে এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। 

    ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেলেই খুব সহজেই হাম দূরীভূত হয়ে যাবে। হামি আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এবং রোগীকে পুরোপুরি বিশ্রামে রাখতে হবে সাধারণ খাবার এর পাশাপাশি অধিক পরিমাণে তরল খাবার দিতে হবে। হাম হলে কি খেতে হবে? এবং হাম হলে কি করনীয়? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। 

    তাই হাম হলে অবশ্যই প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা গ্রহণ শুরু করতে হবে কেননা আপনি যদি সময়মতো হামের চিকিৎসা না করেন তাহলে কিন্তু হাম জটিল আকার ধারণ করতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করালে নিউমোনিয়া, কানে ইনফেকশন এমনকি মস্তিষ্কে ম্যালিডাইসিস রোগও হতে পারে।

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি? সে সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

    হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা -  হামের টিকার নাম কি?

    হাম হলে প্রাথমিকভাবে ঘরের চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনাকে নিম্নবর্ণিত হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে হবে। নিচে হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো: 
    • আমি আক্রান্ত রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়াতে হবে। কেননা এই সময়ে তাদের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যুক্ত ও রসালো খাবার খাওয়া উচিত।
    • ভিটামিন সি যুক্ত ফল বিশেষ করে আমলকি, আমরা, ইত্যাদি যে ফলগুলোতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে সেগুলো খাওয়াতে হবে।
    • হামের রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে এবং সাধারন খাবারের সাথে তরল খাবার প্রদান করতে হবে।
    • কাঁচা পেঁপে হাম আক্রান্ত রোগীকে খাওয়ালে খুব দ্রুত রোগী সেরে উঠতে পারে তাই হা মেরে রোগীকে কাঁচা পেঁপে খাওয়াতে পারেন। 
    • এক চা চামচ মধুর সাথে সামান্য পরিমাণ গোলমরিচের গুড়ো মিশ্রিত করে খেলে রোগী উপকার পাবে।
    হাম থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে হাম রোগের যে প্রতিষেধক টিকা রয়েছে সেটা অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে হামের টিকা গ্রহণ না করলে পরবর্তীতে হামে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

    হামের টিকার নাম হলো 'এমএমআর' টিকা। সরকার থেকে বিনামূল্যে এই টিকা সরবরাহ করা হয় তাই যখন সময় হবে তখন অবশ্যই আপনার শিশুকে টিকা দিবেন। যারা হামের প্রতিষেধক এই টিকা গ্রহণ করে সাধারণত পরবর্তীতে তাদের হাম হয়না। হামের টিকার নাম কি? তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। 

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি? তা জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন। 

    হামের হোমিও চিকিৎসা

    হামের হোমিও চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে যদি হামের হোমিও চিকিৎসা করা যায় তাহলে খুব সহজেই হাম থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিচে হামের হোমিও ঔষধের তালিকা তুলে ধরা হলো: 
    • একোনাইট ন্যাপ। রোগীর যদি খুব অস্থির হয়ে থাকে এবং ছটফটানি থাকে, সাথে পানির পিপাসার লক্ষণ থাকে এবং প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয় তাহলে একোনাইট ন্যাপ এ রোগীর জন্য পার্ফেক্ট হামের ঔষধ।
    • বেলেডোনা। হামের রোগীর যদি প্রচন্ড জ্বর থাকে এবং মুখমণ্ডল ও চোখ লাল টকটকে হয়ে যায় এবং মাঝে মাঝে চমকে ওঠে তাহলে সেই রোগীর ক্ষেত্রে বেলেডোনা ঔষধটি অধিক কার্যকর বলে বিবেচিত।

    • জেলসিমিয়াম। হোমিওপ্যাথিতে হামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হলো জেলসিমিয়াম রোগীর যদি জ্বর ও সর্দি থাকে এবং সাথে হাঁচি হয় তাহলে জেলসিমিয়াম ঔষধটি সেই রোগের জন্য অনেক উপকারী।
    • এন্টিম টার্ট। মৃদু জ্বরের সাথে যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে তাহলে সেই রোগের জন্য উপযুক্ত ঔষধ হলো এন্টিম টার্ট। 
    • ফেরাম ফস। হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহৃত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হামের ঔষধ হলো ফেরাম ফস। 

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি?

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম - হাম ভাইরাসজনিত রোগ: উপসংহার

    হাম রোগের ভাইরাসের নাম, হাম ভাইরাসজনিত রোগ, হাম কেন হয়?, হাম হলে কি খেতে হবে? হাম হলে কি করনীয়? হাম কি ছোয়াছে? হাম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, হামের হোমিও চিকিৎসা, এবং হামের টিকার নাম কি? সে সম্পর্কে উপরে ইতোমধ্যেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশাকরি উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো আপনার উপকারে আসবে। ১৬৪১৩

    Next Post Previous Post
    No Comment
    Add Comment
    comment url