জাকারিয়া নবীর জীবনী - জাকারিয়া আঃ এর দোয়া
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনারা যদি জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের সাথে সম্পুর্ন পোস্ট জুড়ে থাকুন। আজকের এই পোস্টে আপনারা জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
আপনি যদি জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পুর্ন পোস্ট জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরী না করে জাকারিয়া নবীর জীবনী - জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জেনে নেই।
জাকারিয়া নবীর জীবনী
প্রিয় পাঠক আপনারা যারা আমাদের এই পোস্টটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে জানতে চান। তাই গুগলের সার্চ করে আমাদের পোষ্ট টি ওপেন করেছেন। তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের এই পোস্টে আমরা জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জাকারিয়া নবীর জীবনী এবং জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জেনে নেই।
হযরত জাকারিয়া আঃ ছিলেন দাউদ ও সুলাইমান আঃ এর বংশধর। আপনারা অনেকেই জানেন যে জাকারিয়া আঃ ছিলেন বনি ইসরাইলের নবী ইয়াহইয়া আঃ এর পিতা। বর্ণনা অনুযায়ী তিনি বাইতুল মুকাদ্দাসের নিকটে বাস করতেন। জাকারিয়া আঃ বনি ইসরাইল বংশের ছিলেন। তিনি ইশা আঃ এর মাতা মরিয়ম অভিভাবক ও লালনপালনকারী ছিলেন। আল্লাহ তাআলা জাকারিয়া আঃ বৃদ্ধ বয়সে একমাত্র সন্তান দান করেন যার নাম ইয়াহইয়া আঃ।
জাকারিয়া আঃ নীরবে তার প্রতিপালক এর কাছে আহব্বান করতেন, " হে আমার প্রতিপালক তোমাকে আহ্বান করি আমি কখনো ব্যর্থ হয়নি। আমি আশংকা করি আমার পর আমার স্বগোএীয়দের সম্পর্কে। আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। সুতরাং তুমি তোমার নিকট হতে আমাকে দান করো উত্তরাধিকারী। যে আমার উত্তরাধিকারিত্ব করবে এবং উত্তরাধিকারিত্ব করবে ইয়াকুব বংশের এবং হে আমার প্রতিপালক তাকে আরো সন্তুষ্ট ভাজষ"।
হযরত জাকারিয়া আঃ এর সন্তান লাভের পেছনে আরেকটি মূল কারণ হলো তিনি হযরত মরিয়ম ইমরানকে বায়তুল মোকাদ্দাসে দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হযরত যাকারিয়া ও ইয়াহইয়া (আ:)সন্তান লাভের জন্য যাকারিয়ার দোআ। ইয়াহইয়ার বৈশিষ্ট্য ইয়াহ্ইয়া ও যাকারিয়ার মৃত্যুযাকারিয়া ও ইয়াহইয়া সুলায়মান পরবর্তী দুই নবী পরস্পরে পিতা পুত্র ছিলেন। বায়তুল মুক্বাদ্দাসের অধিবাসী ছিলেন।ইয়াহইয়া ছিলেন পরবর্তী নবী ঈসা (আঃ) এর মায়ের আপন খালাতো ভাই। তিনি ঈসার ছয় মাস পূর্বেই দাওয়াতের কাজ শুরু করেন।
হযরত যাকারিয়া ও ইয়াহ্ইয়া (আঃ) সম্পর্কে ৪টি সূরার ২২টি আয়াতে বর্ণিত রয়েছে। তারমধ্যে সূরা আন আমে কেবল ১৮ জন নবীর নামের তালিকাযর মধ্যে তাঁদের নাম উল্লেখিত হয়েছে। অন্য সূরা গুলোতে সংক্ষেপে কেবল ইয়াহইয়া নবীর জন্ম সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। যাকারিয়া (আঃ) সম্পর্কে কুরআনে কেবল এতটুকু বর্ণিতহয়েছে যে তিনি মারিয়ামের লালন পালনকারী ছিলেন।
এ বিষয়ে আল্লাহ সূরা আলে ইমরানে বলেন, যে ইমরানের স্ত্রী মানত করেছিলেন যে আমারগর্ভের সন্তানকে আমি আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে দিলাম। তিনি ধারণা করেছিলেন যে তাঁর একটি পুত্র সন্তান হবে এবং তাকে তিনি আল্লাহর ঘর বায়তুল মুক্বাদ্দাসের খিদমতে নিয়োগ করবেন। কিন্তু পুত্রের স্থলে কন্যা সন্তান অর্থাৎ মারিয়াম জন্মগ্রহণ করলে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। আল্লাহ তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন,
ﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮُ ﻛَﺎﻷُﻧْﺜَﻰ
"এই কন্যার মত কোন পুত্রই নেই" (আলে-ইমরানঃ ৩-৩৮)
আল্লাহ বলেন, ﻫُﻨَﺎﻟِﻚَ ﺩَﻋَﺎ ﺯَﻛَﺮِﻳَّﺎ ﺭَﺑَّﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺏِّ ﻫَﺐْ ﻟِﻲْ ﻣِﻦ ﻟَّﺪُﻧْﻚَ ﺫُﺭِّﻳَّﺔًﻃَﻴِّﺒَﺔً ﺇِﻧَّﻚَ ﺳَﻤِﻴْﻊُ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀَ- ) ﺁﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ
সেখানেই যাকারিয়া তার পালনকর্তার নিকটে প্রার্থনাকরল এবং বলল, "হে আমার পালনকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পূত-পবিত্র সন্তানদান কর। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী" (আলে ইমরানঃ ৩-৩৮)।
একথাটি অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত ভাবে-
আরবিঃ
ﻛﻬﻴﻌﺺ- ﺫِﻛْﺮُ ﺭَﺣْﻤَﺔِ ﺭَﺑِّﻚَ ﻋَﺒْﺪَﻩُ ﺯَﻛَﺮِﻳَّﺎ- ﺇِﺫْ ﻧَﺎﺩَﻯ ﺭَﺑَّﻪُ ﻧِﺪَﺍﺀ ﺧَﻔِﻴًّﺎ- ﻗَﺎﻝَﺭَﺏِّ ﺇِﻧِّﻲ ﻭَﻫَﻦَ ﺍﻟْﻌَﻈْﻢُ ﻣِﻨِّﻲ ﻭَﺍﺷْﺘَﻌَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﺷَﻴْﺒﺎً ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﻛُﻦ ﺑِﺪُﻋَﺎﺋِﻚَ ﺭَﺏِّ ﺷَﻘِﻴًّﺎ – ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﺧِﻔْﺖُ ﺍﻟْﻤَﻮَﺍﻟِﻲَ ﻣِﻦﻭَﺭَﺍﺋِﻲ ﻭَﻛَﺎﻧَﺖِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗِﻲ ﻋَﺎﻗِﺮًﺍ ﻓَﻬَﺐْ ﻟِﻲ ﻣِﻨﻠَّﺪُﻧﻚَ ﻭَﻟِﻴًّﺎ- ﻳَﺮِﺛُﻨِﻲ ﻭَﻳَﺮِﺙُ ﻣِﻦْ ﺁﻝِ ﻳَﻌْﻘُﻮﺏَ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻪُ ﺭَﺏِّﺭَﺿِﻴًّﺎ – ﻣﺮﻳ
অর্থঃ এটি আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহের বিবরণ তার বান্দা যাকারিয়ার প্রতি। যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করেছিল নিভৃতে। সে বলল, "হে আমার পালনকর্তা! আমার অস্থি দুর্বল হয়ে গেছে এবং বার্ধক্যের কারণে মস্তক শ্বেত-শুভ্র হয়েগেছে।
হে প্রভু! আপনাকে ডেকে আমি কখনো নিরাশ হইনি। আমি ভয় করি আমারপরবর্তী বংশধরের। অথচ আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। অতএব আপনি নিজের পক্ষ থেকেআমাকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন। সে আমার স্থলাভিষিক্ত হবে এবং উত্তরাধিকারীহবে ইয়াকূব-বংশের এবং হে প্রভু! আপনি তাকে করুন সদা-সন্তুষ্ট।"(মারিয়াম ১৯ঃ ২-৬)
জাকারিয়া আঃ এর দোয়া
আমরা ইতিমধ্যে জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনারা যারা জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল তাদের জন্য উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এখন আমরা জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জানব। তিনি সন্তান লাভের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে একান্ত দোয়া করেছিলেন। তাহলে চলুন জাকারিয়া নবীর জীবনী এর সাথে সাথে জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জানব।
আরবিঃ
هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُ قَالَ رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
অর্থঃ
সেখানেই জাকারিয়া (আলাইহিস সালাম) তাঁর পালনকর্তার কাছে (এভাবে) প্রার্থনা করলেন। বললেন- হে আমার পালনকর্তা! তোমার কাছ থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান কর। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’ (সুরা ইমরানঃ আয়াত ৩৮)
ফেরেশতারা তাকে ডেকে বলল, সে যখন কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন যে হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বাণীর সত্যায়নকারী নেতা ও নারী সম্ভোগমুক্ত এবং নেককারদের মধ্য থেকে একজন নবী।
সে বলল, "হে আমার রব কীভাবে আমার পুত্র হবে? অথচ আমার তো বার্ধক্য এসে গিয়েছে আর আমার স্ত্রী বন্ধা"। তিনি বললেন, "এভাবেই আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন"। সে বলল, "হে আমার রব আমাকে দেন একটি নিদর্শন"। তিনি বললেন, "তোমার নিদর্শন হল, তুমি তিন দিন পর্যন্ত মানুষের সাথে ইশারা ছাড়া কথা বলবে না। আর তোমার রবকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যা তার তাসবীহ পাঠ কর"।
হযরত জাকারিয়া আঃ এর মৃত্যু
এই পোস্টে আমরা ইতিমধ্যে জাকারিয়া নবীর জীবনী এবং জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জেনেছি। আপনি যদি এ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন এখন আমরা হযরত জাকারিয়া আঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে জেনে নিন।
লোকমুখে শোনা যায় যে কাফেররা হযরত জাকারিয়া আঃ হত্যা করার জন্য তাঁকে ঘিরে নিলে তিনি কোনো উপায় না পেয়ে একটি গাছের কাছে আশ্রয় চাইলে গাছটি দুই ভাগ হয়ে যায়। এবং তিনি ওই গাছের মধ্যে আশ্রয় নেন। গাছ আবার আগের মত হয়ে যাই। কিন্তু তার পরনের জামার কিছু অংশ বাইরে বের হয়ে থাকে এতে কাফেররা চিনে ফেলে।
যার ফলে কাফেররা অস্ত্র দিয়ে তার দুই ভাগ করে ফেলেন এবং নবী ও দুই ভাগ হয়ে যায়। আমরা অনেকেই এরকম ঘটনার ছোট থেকে শুনে আসছি। জাকারিয়া আঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্ন মত রয়েছে।
শেষ কথাঃ জাকারিয়া নবীর জীবনী - জাকারিয়া আঃ এর দোয়া
আপনারা যারা জাকারিয়া নবীর জীবনী - জাকারিয়া আঃ এর দোয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আপনি জাকারিয়া নবীর জীবনী সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।১৬৮৩০