১ মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট । গরিবের ডায়েট চার্ট

এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চ্যাট সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। এবং ডায়েট চাট কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। জানতে হলে নিচের দিকে পড়ুন।

আমরা গুগলে এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট সম্পর্কে সার্চ করলে অনেকগুলো ওয়েবসাইট দেখতে পাই। সেগুলো তে লেখা থাকে এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমানো যায়। এক মাসে ১০ কেজি ওজন কমানো যায়। আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেওয়া থাকে। এগুলো কতটা কার্যকর বা কতটা সঠিক তা আমরা কেউ জানিনা। এগুলো সঠিক তখন হবে যখন আপনি এগুলো সঠিক ব্যবহার করবেন। চলুন তাহলে এক মাসে কিভাবে ২০ কেজি ওজন কমাবেন জেনে নি। এবং কিভাবে কি করলে তাড়াতাড়ি ওজন কমবে, তাও জেনে নি।

১ মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর জন্য কিছু ডায়েট চার্ট রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করলে বা মেনে চললে আপনি এক মাসে ২০ থেকে ২৫ কেজির মত ওজন কমাতে পারবেন। এটি করতে গেলে আপনাকে সর্বোচ্চ কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কারণ এক মাসের ২০ কেজি ওজন কমানো এতটা সহজ নয়। এক মাসের সর্বোচ্চ ওজন যদি কমানো যায় তাহলে ১০ কেজির মত কমানো যাবে । কিন্তু এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমাতে গেলে আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। তাই এটিকে আস্তে আস্তে কমাতে হবে । চলুন তাহলে ডায়েট চার্ট দেখে নি।

সকালের খাবার=০৯.০০

সকালের নাস্তায় আমরা অনেক সময় অনেক রকম খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো আমাদের শরীরকে আরো বৃদ্ধি করে বা মোটা করে। সেসব খাবারকে আমাদের পরিহার করতে হবে। সকালে আপনারা যেসব খাবার খাবেন তার মধ্যে একটি হলো... ডিম। ডিম আপনারা প্রতিদিন সকালে একটি করে খেতে পারেন। এবং এক গ্লাস বিট রুটের জুস খাবেন। লেবুর সরবত খাবেন। এটি আপনার সকালের নাস্তা

দুপুর =১১.০০

দুপুর 11 টার দিকে আপনাকে কয়েকটি খাবার খেতে হবে। যেমন সবুজ চা। আমরা সকলেই জানি যে সবুজ চায় অর্থাৎ গ্রিন টি তে কোন ধরনের ক্যালরি নেই। যার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারে না। তারপর আপনারা আপেল খেতে পারেন। আপেল বেশি খাওয়া যাবে না, অর্ধেক খেতে হবে।




দুপুর =০১.০০

আমাদের একটি কথা সবসময় মনে রাখতে হবে সেটি হলো কোন সময় ভাত বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। কারণ ডায়েট করতে গেলে আপনাকে ভাত পরিহার করতে হবে। আপনারা চাইলে জবের রুটি খেতে পারেন। এটি শরীর কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার সঙ্গে আপনারা সবজি জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাবেন কারণ। সবজি জাতীয় খাবার শরীর কমাতে বা শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু একটি কথা মনে রাখবেন যে জিনিস খাবেন ,তার সঙ্গে মিষ্টি খাবেন না।

বিকেল =০৪.০০

বিকেল চারটার সময় আপনারা একটি হালকা পরিমাণে নাস্তা করতে পারেন। সেটি হল সবজি বিস্কুট। এবং এক কাপ গ্রিন টি।এর বেশি কিছু খাবে না। কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে যে গ্রিন টি মধ্যে কোনভাবেই চিনেমিক্স করা যাবে না। চাইলে আপনারা হালকা পরিমাণে মধু মিক্স করে খেতে পারেন।

সন্ধ্যা =০৬.০০

সন্ধ্যা ছয়টার সময় আপনারা একটি খাবার খেতে পারেন সেটি হল গাজরের জুস। আমরা সকলে গাজর কে অনেক ভালোভাবে চিনি। যদি আপনারা এই গাজরের জুসগুলো সন্ধ্যা ছয়টার দিকে খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন কমাতে ভালো কাজ করবে। তাই গাজর খেতে পারেন।

রাত =০৭.৩০

রাত্রে খাবার এক্কেবারে সর্বনিম্ন খেতে হবে। কারণ রাত্রে খাবার শরীরে প্রচুর পরিমাণে প্রভাব ফেলে। তাই রাত্রে আপনারা কয়েকটি খাবার খেতে পারেন তার মধ্যে প্রধান হল সবজি। এই সবজি আপনারা বেশি করে খেতে পারেন। ভাত আধা কাপ মত খেতে হবে ,বেশি খাওয়া যাবে না। পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।

আপনারা এই খাবারগুলো যদি ঠিকভাবে খান বা এই নিয়মটি অর্থাৎ ডায়েট চার্ট অনুসরণ করেন তাহলে আপনারা দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন। কিন্তু একটি কথার মাথায় রাখতে হবে এক মাসে কোন ভাবে ২০ কেজি ওজন কমানো সম্ভব নয়। এক মাসে ২০ কেজি ওজন কমানোর জন্য যারা google এ সার্চ করেন তারা একটি ভুল ধারণার মধ্যে পড়ে আছেন। তাই এক মাসের ২০ কেজি ওজন কমানো যাবে না। এক মাসের সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন কমানো যাবে। কিন্তু এটিকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কমাতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানোর নিয়ম

এক মাসে ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি অনেক ওজন কমাতে পারেন। কিন্তু একটি কথা মাথায় রাখতে হবে তার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে খাবারও মেনটেন করতে হবে। যদি খাবার মেনটেন না করতে পারেন তাহলে কোন ভাবেই এক মাসে ওজন কমাতে পারবেন না।চলুন তাহলে কোন কোন ব্যায়াম করার মাধ্যমে এক মাসের ওজন কমানো যায় জেনে নেই।

হাঁটতে হবে=আপনাকে প্রচুর পরিমাণে হাঁটতে হবে। অথবা পরিশ্রম করতে হবে। যেন আপনার শরীরের মধ্যে দিয়ে ঘাম বেরিয়ে আসে। এর ফলে আপনার শরীরের ভেতরে যেসব চর্বি রয়েছে সেগুলো গলতে থাকবে ,. এবং আপনার শরীরের ওজন কমতেই থাকবে। তাই যদি আপনি আপনার শরীর ফিট রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন সকালে এবং বিকেলে হাঁটতে হবে।

দড়ি লাফানো=আমরা অনেকেই জানিনা দড়ি লাফানো এই ব্যাম কতটা  কার্যকর। আমাদের কোন ধারণাই নেই এর কার্যকারিতা এত পরিমাণে রয়েছে। যা আপনাকে বলে বোঝানো যাবে না। এ দড়ি লাফানোর মধ্য দিয়ে আপনার শরীরে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে দিয়ে আপনার শরীর ওজন কমতে থাকে। তাই প্রতিদিন সর্বনিম্ন এক থেকে দেড় ঘন্টা মতো দড়ি লাফাবেন।

সাইকেল চালানো=শরীর কমানোর জন্য সাইকেল চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা চেষ্টা করবেন প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে কমপক্ষে দুই ঘন্টা করে সাইকেল চালানোর। কারণ এই সাইকেল চালানোর মধ্য দিয়ে আপনার শরীরের সব অঙ্গই নড়ে এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। এবং ঘামের মাধ্যমে আপনার শরীরে যেসব চর্বি রয়েছে সেগুলো গলে যায়।

সাঁতার কাটা=আমরা যদি আর্মি ট্রেনিং দেখতে যাই তাহলে বিশেষ করে সাঁতারের উপর অনেক নজরদারি দিয়ে থাকে। তাহলে আপনি বুঝতে পারছেন সাঁতার কতটা কার্যকর। তাই ওজন কমাতে গেলে এবং আপনার উচ্চতা বৃদ্ধি করতে গেলে অবশ্যই সাঁতার কাটা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।

ইয়োগা করা=ইয়োগা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যায়াম। এই ব্যায়ামটি বিশেষ করে ইন্ডিয়াতে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এবং এর ফলাফল বেশ ভালই। তাই যদি আপনার ওজন কমাতে চান এবং শরীর ফিট রাখতে চান এবং স্বাস্থ্যের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ইয়োগা করতে হবে। চাইলে আপনারা বেশি করতে পারেন

ওজন কমানোর নিয়ম

ওজন কমানোর জন্য আপনার কিছু নিয়ম রয়েছে, সেই নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে চলুন তাহলে সেই নিয়মগুলো জেনে নি।

  • ওজন কমানোর জন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে লেবুর জল খেতে হবে। অর্থাৎ এক গ্লাস পানিতে একটি লেবু মিশিয়ে খেতে হবে।
  • রাত্রে ঘুমানোর সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
  • যে কোন খাবারের সঙ্গে অলিভ অয়েল তেল মিশিয়ে খেতে হবে।
  • শাকসবজি অধিক পরিমাণে খেতে হবে।
  • প্রতিদিন রাত্রে গ্রিন টি খেতে হবে।
  • রাত্রে ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে যে কোন খাবার খেয়ে নিতে হবে।
  • রাত্রে সবার আগে এক চামচ পরিমাণ মধু খেতে হবে।
  • চাইলে আপনারা মালটা খেতে পারেন।

ডায়েট করার সময় যেসব খাবার পরিহার করতে হবে

কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ওজন অনেক অংশে বৃদ্ধি পায়। তাই আজ আমরা কোন কোন খাবারে ওজন বৃদ্ধি করে তা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরব। এবং কোন কোন খাবার খাবেন না তা তুলে ধরব।

  1. মিষ্টি কোন পরিমানে খাওয়া যাবে না। যদি আপনার মিষ্টি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে এটি আপনাদের ওজন বৃদ্ধি করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই মিষ্টি পরিহার করতে হবে।
  2. চিনি পরিহার করতে হবে। চিনি মানুষের দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
  3. ভাত একেবারে অল্প পরিমাণে খেতে হবে। বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে শরীরের ইন্সুরেন্স কমে যায় এবং সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ভাত অবশ্যই কম করে খেতে হবে।
  4. খাবার নিয়ন্ত্রণ রাখা, এটি আমাদের সকলেরই কর্তব্য। খাবার যদি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে।
  5. যেকোনো ধরনের চিপস পরিহার করা। কারণ এই চিপস ফাস্টফুড যা শরীর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং শরীরে ক্ষতি করতে পারে।
  6. বার্গার পরিহার করতে হবে। কারণ বার্গার এটি মানব দেহের জন্য উপকারে থেকে ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বিশেষ করে যাদের ডায়েট করবেন তারা বার্গার থেকে দূরে থাকবেন।
  7. কোমল জাতীয় পানি থেকে দূরে থাকবেন। এগুলো শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  8. পোল্টির মাংস থেকে দূরে থাকবেন। কারণ পোল্টির মাংস তে কিছু কেমিক্যাল থাকে যা আপনার শরীরে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এবং নাকে পলিপাস তৈরি করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই পল্টি।
  9. নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকবেন। কারণ নেশার জাতীয় দ্রব্য খাবার ফলে শরীরের অনেক অংশে ওজন বেড়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওজন কমে। কিন্তু এটি শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে।
  10. সারাদিন শুয়ে থাকা পরিহার করতে হবে । ভারি ভারি কাজ করা থেকে শুরু করে দৌড়ানো হাটা ইত্যাদি সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে। নয়তো আপনার শরীরে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং ইনসুলের মাত্রা কমে যাবে।এর মধ্য দিয়ে আপনার ওজন বেড়ে যাবে।
  11. প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকল ধরনের ব্যায়াম এবং সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে

কোন কোন ফল ওজন কমাতে সাহায্য করে

আমরা এখন এমন কিছু ফলের কথা বলব যেগুলো ওজন কমাতে সাহায্য করে। চলুন তাহলে জেনে নি।

  1. লেবু
  2.  কলা 
  3. মালটা
  4. বিটরুট 
  5. গাজর 
  6. আনারস 
  7. পেয়ারা 
  8. কমলা
  9.  তরমুজ 
  10. লিচু 
  11. পেঁপে 
  12. আপেল 
  13. স্ট্রবেরি

এগুলো খাওয়ার ফলে শরীর অনেকাংশে ওজন কমে যায়। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা অবশ্যই এ ফলগুলো খেতে পারে। না খেতে পারলে আপনার উপরের দিকে অনুসরণ করতে পারেন। যেগুলো ব্যায়ামের কথা অথবা যেগুলো নিয়মের কথা বলা আছে সেগুলো মানতে পারলে আপনার ওজন কমে আসবে।

সতর্কতা

যারা ভাবছেন এক মাসের ২০ কেজি ওজন কমাবেন তাদের জন্য একটি বড় সতর্কতা নিয়ে এসেছি। যদি আপনি এক মাসে দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে এর ফলে আপনার শরীর দুর্বল হতে পারে। এমনকি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই আপনারা একটি কথা মাথায় রাখবেন দ্রুত ওজন কমানোর থেকে আস্তে আস্তে ওজন কমানো অনেক অংশে ভালো। তাই প্রথমে আপনারা সবগুলো একসাথেই মানবেন না। আস্তে আস্তে আপনার শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নিবেন। তারপর থেকে দেখবেন আপনার শরীর অটোমেটিক ওজন কমে যাচ্ছে। আবারও বলছি হঠাৎ করে ওজন কমানোর চিন্তাভাবনা দূর করুন।

উপসংহার

আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে এক মাসের ২০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। এবং গরিবের চার্ট সম্পর্কে তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই নিয়মগুলো অনুসরণ করেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনাদের ওজন দ্রুত কমে যাবে। তাই যদি কেউ ওজন কমাতে চান তারা এগুলো আস্তে আস্তে ফলো করতে পারেন।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url