আয়রন যুক্ত পানির ক্ষতিকর দিক। আর্সেনিক যুক্ত পানির খতিকর দিক
আয়রনযুক্ত পানির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরব। কারণ আমাদের কমবেশি প্রায় অনেকেই আয়রন যুক্ত পানি খেয়ে থাকে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে আয়রনযুক্ত পানি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
কমবেশি প্রায় অনেক জায়গাতেই আয়রন যুক্ত পানি দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে নিচু এলাকাতে বেশি আয়োজনযুক্ত পানি দেখতে পাওয়া যায়। যেমন তানোর, রাজশাহী, ঢাকা, ইত্যাদি এসব জায়গাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনযুক্ত পানি রয়েছে। এই আয়রন যুক্ত পানি খাবার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় এবং এ পানির কারণে আমাদের আসবাবপত্র জিনিস এর সমস্যা হয়। চলুন তাহলে আয়রনযুক্ত পানি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নি।
আয়রন কি?
আয়রন কি? এটা আমাদের সকলের কম বেশি জেনে থাকা উচিত। কারণ এটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরীক্ষার খাতায় লাগতে পারে।এবং কমবেশি আমাদেরকে এ সম্পর্কে জেনে থাকা উচিত। আয়রন হলো এমন একটি ধাতু যেটি পৃথিবীর গতি বজায় রাখে। এবং পৃথিবীর ভারের প্রায় ৫% আয়রন। একটি চুম্বক জাতীয় ধাতু। যা দেখতে চকচকে হয়ে থাকে।এবং এটি স্টিল তৈরির জন্য প্রধান উপাদান। এই আয়রন বিভিন্ন ইলেকট্রিক রাসায়নিক ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই আইরনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইস্পাত রেলপথ যানবাহন ইত্যাদি তৈরি করে থাকে। এবং এগুলো তৈরি করার জন্য আয়রন ব্যবহার করা হয়।
আয়রন যুক্ত পানির ক্ষতিকর দিক।
আয়রনযুক্ত পানির কিছু নির্ধারিত ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যেমন
- পেটের সমস্যা তৈরি করে : এ পেটের সমস্যা হতে পারে বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি মত সমস্যা।এ সমস্যার জন্য পেট ফাঁপা পেট ফোলা ইত্যাদি তৈরি হতে পারে। এবং এ আয়রনযুক্ত পানি দীর্ঘদিন খাবার ফলে লিভারের অথবা কিডনির সমস্যা তৈরি হতে পারে।
- হিমোক্রোমাটোসিস :এ রোগটি যাদের আছে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। কারণ এই আয়রনযুক্ত পানি দীর্ঘদিন খাবার ফলে এটি পেটের মধ্যে জমা হয়ে যায়। এবং এর ফলে লিভারের সমস্যা এবং হার্টের সমস্যা এবং ত্বকের সমস্যা তৈরি করে।
- জয়েন্টের ব্যথা :পানিতে আয়রনযুক্ত পানি খাওয়ার ফলে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। যেমন পায়ের হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা হাতে, হাতের জয়েন্টের ব্যাথা অর্থাৎ মানবদেহের যেখানে জয়েন রয়েছে এই জয়েন্ট গুলোর ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে।
- দুর্বলতা: যারা দীর্ঘদিন ধরে আয়রনযুক্ত পানি খায় তাদের একটি বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে সেটি হলো দুর্বলতা। এবং ক্লান্তি ক্লান্তি ভাব অনুভব করা।
- শ্বাসকষ্ট সমস্যা: যাদের শ্বাসকষ্ট, এলার্জি, হাঁপানি ইত্যাদি রয়েছে তারা কোনোভাবেই আয়রন যুক্ত পানি খাবেন না। এর ফলে সমস্যা দেখা দেয়।
পানিতে আয়রন পরীক্ষা করার উপায়।
পানিতে আয়রন পরীক্ষা করার জন্য আপনাদের বেশ কয়েকটি কাজ করতে হবে। যদি আপনারা এ কাজগুলো ঠিকঠাক ভাবে এবং নিয়ম মেনে করেন তাহলে পানিতে আয়রন আছে কিনা তা বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন তাহলে পানিতে আয়রন আছে কিনা জেনে নি।
- পানিতে আয়রন চেক করার জন্য আপনাকে প্রথম একটি কাচের গ্লাস নিতে হবে।
- এরপর যে পানি আপনি আয়রন আছে কিনা তা জানতে চান সেই পানি সেই কাঁচের গ্লাসের মধ্যে রাখতে হবে।
- দুই থেকে তিন দিন রাখার পর যদি নিচে একটি হলুদ বর্ণের আবরণ সৃষ্টি হয় এবং খড়খড়ে ভাব সৃষ্টি হয় তাহলে বুঝে নেবেন পানিতে আইরন রয়েছে।
টিউবয়েলের পানিতে আয়রন দূর করার উপায়।
যারা টিউবয়েলের পানিতে আয়রন দূর করতে চান তাদেরকে বেশ কয়েকটি কাজ করতে হবে। যদি কাজগুলো আপনারা ঠিকঠাকভাবে করেন তাহলে টিউব আয়রন দূর করতে পারবেন।
- টিউবলের পানিতে আয়রন দূর করার জন্য আপনাদের একটি ফিল্টার নিতে হবে। অর্থাৎ যেসব ফিলটার দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে সেসব ফিল্টার গুলো ব্যবহার করতে হবে।
- চাইলে আপনারা এর পাশে আরেকটি নতুন টিউবল তৈরি করতে পারেন। এবং সেটি থেকে গভীরতা একটু বেশি করবেন।
- পানিতে আয়রন দূর ।করার জন্য আপনারা পানিকে বিশ মিনিট ভালোভাবে ফুটিয়ে পান করতে
পানির আয়রন চুলের কি ক্ষতি করে?
পানির আয়রন চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করতে পারে। যেমন চুলের গোড়া আলগা করে দেওয়া এবং চুলের রং পরিবর্তন করা এবং চুল খসখসে হয়ে যায় ইত্যাদি ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনারা কয়েকটি কাজ করতে পারেন।
যে পানিতে আয়রন রয়েছে সে পানির মধ্যে আপনারা চাইলে কিছু লেবুর রস দিয়ে দিতে পারেন। এবং সেই লেবুর রস দেওয়ার পর সেই পানি চুলের দিয়ে ব্যবহার করলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে আশা করছি।
আয়রনযুক্ত পানিতে চুলের যত্ন।
আয়রনযুক্ত পানিতে চুলের যত্ন নেয়া আমাদের জন্য কর্তব্য। কারণ চুল আমাদের একটি সৌন্দর্যের প্রতীক। যদি চুল মাথায় না থাকে তাহলে দেখতে ভালো লাগে না। এবং যদি এই চুল আয়রন যুক্ত পানির কারণে উঠে যায় তাহলে এটি কেমন হয়? চলুন তাহলে আয়রন যুক্ত পানিতে কিভাবে চুলের যত্ন নিবেন জেনে নি।
- চুল আয়রনযুক্ত পানিতে ডোবানোর আগে অবশ্যই সেই বালটির মধ্যে ভিনেগার দিবেন। এবং সে ভিনেগার ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
- নয়তো কিছু লেবুর রস মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। যদি আয়রনযুক্ত পানি হয় তাহলে এই লেবু ব্যবহার করা উত্তম। এতে করে আপনার চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং আয়রন দূর হবে।
আর্সেনিক যুক্ত পানির খতিকর দিক।
- ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ।
- ত্বকে দাগ সৃষ্টি হয় ।
- ত্বকে ক্যান্সারের মতো সমস্যা ।
- শ্বাসকষ্ট ।
- হাঁপানি ।
- ফুসফুসের সমস্যা।
- ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়া ।
- উচ্চ রক্তচাপ ।
- হৃদপিণ্ডে ক্যান্সার।
- লিভারের সমস্যা ।
- কিডনির সমস্যা ।
- গর্ভবতী মহিলাদের সমস্যা। কোষ্ঠকাঠি না এবং ব্রেনের সমস্যা তৈরি করে।
উপসংহার
আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে আয়রনযুক্ত পানির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে বিস্তারিত ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আরেকটি কথা হল আয়রন যুক্ত পানি অধিক পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। কিন্তু আরেকটি বিষয় আমাদের লক্ষ্য করতে হবে যদি পানিতে কোনো রকম আয়রন না থাকে তাহলে এটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতি করতে পারে। তাই পানিতে আয়রন হালকা পরিমাণে প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু বেশি পরিমাণে না। আশা করি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।