দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা।দুধের সর খেলে কি হয়?
দুধের সর উপকারিতা এবং দুধের সর খেলে কি হয় এটি আমাদের সকলের জেনে থাকা উচিত। কারণ দুধের সর এর কিছু উপকারিতা রয়েছে এবং ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। সেগুলো আমাদের জানা থাকা উচিত। এর ফলে আমরা বিভিন্ন উপকারিতা পেতে পারি। চলুন তাহলে দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা এবং দুধের সর খেলে কি হয় তা জেনে নিই।
দুধ এটি আমাদের কমবেশি ভাই সকলের ই পছন্দের। দুধ খাওয়ার পরে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন ত্বকের উজ্জ্বলতা এমনকি হাড় মজবুত স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি এরকম অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। এখন আমরা দুধের সর খেলে কি উপকারিতা হয় সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরব। একটি মানুষ দুধ খেয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ তার গড় আয়ু যতদিন সে ততদিন বেঁচে থাকতে পারবে। শুধু দুধ খেয়ে অন্য কিছু না। তাহলে বুঝতে পেরেছেন দুধের উপকারিতা কত। এবং একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সর্বপ্রথম গড়ে ১ -৩ বছর পর্যন্ত দুধ খেয়ে থাকে। এবং এই দুধের ওপরই সে নির্ভরশীল হয়ে থাকে। তাই এখন আমরা দুধের সর খেলে কি হয় তা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা।
দুধের সর খাওয়া বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। এগুলো আমরা এখন আপনাদের সামনে লাইন আ কারে তুলে ধরব।যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা জানতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করি।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে দুধের শর অত্যন্ত উপকারী। যাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা কম এবং ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বা সমস্যা রয়েছে। তারা এই দুধ খেতে পারেন। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক শুষ্কতা ঠিক রাখবে।
- হাড় মজবুত করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে দুধ। আমরা সকলে জানি যে হারমজবুতের জন্য দুধের কিছু বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। যেগুলো হার এবং ত্বক আরও বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা আনে। তাই আমাদের প্রতিদিন দুধ এবং দুধের সর খাওয়া উচিত।
- চুল বৃদ্ধি করে। যদি কেউ প্রতিদিন দুধের সর খায় তাহলে তার চুল অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে। এবং চুল মুসৃরিন এবং চকচকে হবে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে দুধের সর অত্যন্ত উপকারী। যাদের হজম শক্তি একেবারে দুর্বল তারা এই দুধ খেতে পারেন। কারণ এই দুধের মধ্যে কিছু এসিড রয়েছে যেগুলো হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দুধ অত্যন্ত উপকারী। আমরা সকলেই জানি দুধ আমাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী একটি পদার্থ। যদি আমরা এই দুধগুলো প্রতিদিন নিয়মিত খাই তাহলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবো। এমন কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- যাদের দাঁতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে যেমন দাঁত শির শির করা, দাঁত ব্যথা ইত্যাদি ধরনের সমস্যার জন্য এই দুধের সর খেতে পারেন। এর ফলে হাড় এবং দাঁত মজবুত হবে।
- ব্রণের দাগ বা ব্রণ দূর করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে দুধের সর। নিয়মিত খান তাহলে ত্বকের মধ্যে ব্রণ বের হবে না। মেসতা থাকবে না। এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি কবে।
দুধের সর খেলে কি হয়?
দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরের দিকে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। এর মধ্যে থেকে দুধের সর খেলে কি হয় তা জানতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় যেমন হাড় এবং দাঁত মজবুত থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন হাড় মজবুত করতে দুধের অত্যন্ত উপকারিতা। তাবকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করতে দুধের সর আপনি খেতে পারেন। এবং চুলের জন্য আপনারা নিয়মিত খেতে পারেন। এবং ত্বকের জন্য আপনারা নিয়মিত খেতে পারেন। এবং কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা অল্প বয়সেই তাদের চেহারার মধ্যে বয়সের ছাপ দেখা দিচ্ছে তারা নিয়মিত দুধের সর খেতে পারেন। এতে করে উপকার পাবেন।
দুধের সাথে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা।
দুধের সাথে কিসমিস খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতায রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল ক্লান্তি। যাদের প্রচুর পরিমাণে ক্রান্তি অনুভব হয় তারা দুধের সাথে নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। এতে করে ক্লান্তি দূর হবে। এবং যাদের অলসতা অলসতা ভাব সৃষ্টি হয় তারা দুধের সাথে কিসমিস খেতে পারে। এতে করে অলসতা থেকে মুক্তি পেতে পারে। এবং হজম, শক্তি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং হাড়ের জন্য দুধ এবং কিসমিস অত্যন্ত উপকারী।
দুধের সর খেলে কি ওজন বাড়ে?
দুধের সর খেলে কি ওজন বাড়ে এটি আমাদের সকলেরই জেনে থাকা উচিত। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের দুধের ওপর প্রচুর পরিমাণে নেশা অর্থাৎ দুধ এর সর প্রতিনিয়ত খেতে থাকে। দুধের সরে কিছু ভ্ থাকে। যার ফলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বা ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যদি কেউ নিয়মিত দুধের সর খায় তাহলে ওজন বাড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দুধের সর দিয়ে ফেসপ্যাক।
যাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা কম এবং ত্বকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ব্রণ রয়েছে তাদের জন্য একটি দুধের সর দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার নিয়ম বলবো। যেগুলোর মধ্য দিয়ে আপনারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারবেন। চলুন দুধের সর দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার নিয়ম গুলো দেখে নি।
- প্রথমে আমরা একটি বাটি নিব।
- এরপর সেই বাটির মধ্যে দুধে সর নেব। এবং তার সঙ্গে সরিষা নেব।
- সেগুলোকে একসঙ্গে ভালোভাবে বেটে নিব।
- এরপর মুখ ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেব।
- মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোয়া হয়ে গেলে সে মুখের উপরে আমরা সেই ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে দিব।
- এরপর বাতাসে ১০ থেকে ১৫ মিনিট শুকিয়ে নেব।
- এরপর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলে দিতে হবে।
এভাবে আপনারা দুধের ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তাদের জন্য এতে করে ভালো উপকার পাবে।
আমাদের বাড়ির পাশে সাব্বির নামের একটি ছেলে তার মুখে প্রচুর পরিমাণে ব্রণ বের হয়েছিল। সে এই নিয়ম টি কাজে লাগিয়েছে। এবং এই নিয়মটি কাজে লাগানোর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই ভাল ফলাফল পেয়েছে। এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং ব্রণগুলো মারা গেছে। তাই আপনারা সাব্বিরের মত যদি ত্বকের ব্রণ দূর করতে চান তাহলে এই নিয়মটি মানতে পারেন।
সতর্কতা এলার্জি সমস্যা থাকলে না ব্যবহার করাই ভালো। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
দুধ মুখে মাখলে কি হয়?
দুধ মুখে মাখলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ব্রণের সমস্যা গুলো দূর হতে পারে। যদি আপনারা নিয়মিত ত্বকে বা মুখে দুধ লাগান বা মাখেন তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। চাইলে আপনারা দুধের সর ব্যবহার করতে পারেন। এতে বেশি ভালো উপকার পাওয়া যাবে। এবং কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু যদি সমস্যা থাকে তাহলে ব্যবহার না করা উচিত।
দুধের সর তৈরি করার নিয়ম।
দুধের সর তৈরি করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম রয়েছে। যদি আপনারা এই নিয়মগুলো অবলম্বন করেন তাহলে অল্প দুধে অনেকগুলো সর তৈরি করতে পারবেন। চলুন তাহলে নিয়ম জেনে নি।
- প্রথমে আপনাকে একটি পাত্রে দুধ নিতে হবে।
- এবং সেটি আগুনের উপর দিতে হবে।
- এরপর আস্তে আস্তে জাল দিতে হবে।
- এবং অনেকক্ষণ ধরে দুধগুলো নাড়াচাড়া করতে হবে।
এভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট যদি নাড়াচাড়া করার পর আগুনের উপর রেখে দিতে হবে। এরকম ভাবে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রাখার পর এক ঘণ্টার মতো রেখে দিতে হবে ঠান্ডা করতে। তাহলে দুধের ওপরে একটি আবরণ সৃষ্টি হবে ওইটাই দুধের সর। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
মনে রাখবেন..
- অতিরিক্ত দুধের সর মাখার ফলে সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
- সবকিছু নিয়ম অনুসারে ব্যবহার করা উচিত।
- ব্যবহারের পূর্বে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা উচিত।
উপসংহার।
আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে দুধের সার খাওয়ার উপকারিতা এবং দুধের সার খেলে কি হয় তা আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা এবং দুধের সর খেলে কি হয় তা জানতে পেরেছেন। এবং আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে পেরেছেন। যেমন দুধের সর দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার নিয়ম বলেছি। এবং দুধের সর খেলে কি ওজন বাড়ে সে সম্পর্কে তুলে ধরেছি। তাই যদি এই নিয়ম অনুসারে আপনারা ব্যবহার করেন বা খান তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। কিন্তু আমরা আপনাদের শুধু ধারণা দেওয়ার জন্য এসব তথ্য দিয়ছি। যদি ত্বকে অ্যালার্জি সমস্যা থাকে বা দুধ খাওয়ার ফলে অন্যান্য সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।