কান পাকা রোগের ঔষধের নাম-কানের ড্রপ এর নাম
কান পাকা রোগের ওষুধের নাম এবং কানের ড্রপ এর নাম সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত তুলে ধরব। যদি জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সঙ্গে আপনাকে থাকতে হবে। চলুন তাহলে জেনে আসি ।
বর্তমানে এখন একটি সমস্যা প্রচুর পরিমাণে দেখা দিচ্ছে। সেটি হল কানের সমস্যা। এ সমস্যার মূলত বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। যদি গ্রাম অঞ্চলের দিকে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চারা অনেক সময় পুকুরে গোসল করে অর্থাৎ সাঁতার কাটে সে ক্ষেত্রে তখন তাদের কানে পানি ঢুকে থাকার ফলে পানি না বের করার কারণে ইনফেকশন তৈরি হয়।
আরো পড়ুন = কোমর ব্যাথঅর ট্যাবলেটের নাম।
যারা শহরে থাকে তারা বাচ্চাকে গোসল করানোর সময় বাচ্চার কানে পানি ঢুকে গেলে সেটি জানতে পারেনা। তার কারণে সে পানি থেকে ইনফেকশন তৈরি হয়। এমনকি কমবেশি একটা মানুষেরই কানের মধ্যে একটি ময়লা যমে সেই ময়লা যদি পরিষ্কার না করা হয় তাহলে সেখান থেকে ইনফেকশন হতে পারে। তাই আজ আমরা কান পাকা রোগের ওষুধের নাম এবং কানের ড্রপের নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরবে। যেটি ব্যবহার করার মাধ্যমে কানের সকল ধরনের সমস্যা দূর হবে। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
কান পাকা রোগ কেন হয়?
- কান পাকা রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সে কারণ গুলোর মধ্যে আমরা বোঝা যায় সেটি হল যে যদি কানে আঘাত লাগে এবং কান দিয়ে রক্ত বের হয় তাহলে তখন যদি সে কানের ব্যবস্থা না নেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে কানে ইনফেকশন হতে পারে।
- কানের সংক্রমণ ঘটতে পারে। অর্থাৎ যদি কোন ভাইরাস কানের মধ্যে এটাক করে অর্থাৎ কানের মধ্যে এসব জীবাণু থাকে সে জীবনের মধ্যে থেকে যদি এটাক করে সে ক্ষেত্রে কান পাকা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- এলার্জির সমস্যার জন্য কান পাকা রোগ হতে পারে। যেমন কানের মধ্যে একটি ইউস্ট্রেসিয়ান টিউব রয়েছে । সেই টিউবে যদি কোন ধরনের জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয় সেখান থেকে এলার্জির সংক্রমণ ঘটলে ইনফেকশন তৈরি হতে পারে।
- কানে পানি ঢোকা যারা দীর্ঘদিন ধরে কানের মধ্যে পানি নিয়ে আছেন এবং কানের সেরকম পদক্ষেপ নেন না তাদের ক্ষেত্রে কানে ইনফেকশনের মত সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন কান দিয়ে রক্ত বের হওয়া কান দিয়ে পুঁজ পড়া আর ইত্যাদি ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
- আরও বিভিন্ন ধরনের অসুখ রয়েছে সে অসুখের মাধ্যমে কান পাকা রোগ সৃষ্টি হতে পারে। তাই যদি আপনারা এরকম সিম্পটম দেখেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবেন।
কান পাকা রোগের ওষুধের নাম।
এখন আমরা কান পাকা রোগের ওষুধের নাম বলব এবং এর পরে আমরা কান পাকা রোগের ড্রপের নাম সম্পর্কে তুলে ধরবো। চলুন তাহলে আমরা এখন কান পাকা রোগের ওষুধের নাম গুলো জেনে নি।
FUROTIL PPLUS
একটি এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট। এটি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে বেশ ভালো কার্যকর। এই ওষুধটি মূলত কোন কাটার ক্ষেত্রে বা ইনফেকশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমন কি গলা ব্যাথার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। এক কথায় যেখানে সংক্রমণ ঘটে সেখানে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ওষুধটি দিনে দুইবার ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ দুই বার খেতে হবে। এবং এই ওষুধটি শুধু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
LOMEFLOX
এটি হলো ফ্লুরোকুইনোলোন অ্যান্টিবায়টিক। যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক দূর করতে বেশ ভালো কাজ করে। এই ওষুধটি মূলত ভালো ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে। এই ওষুধটি খাওয়ার নিয়ম হলো দিনে দুইবার। এটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই সেবন করা উচিত নয়।
ALCLOR (500mg)
এই ওষুধটি হলো এন্টিহিস্টামাইন এটি বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক দূর করতে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে যাদের প্রচুর পরিমাণে শরীরে ছত্রাক জনিত সমস্যা রয়েছে যেমন এলার্জি সমস্যা কান পাকার সমস্যা ইত্যাদি ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা এই ওষুধটি ব্যবহার করে থাকে। এই ওষুধটি খাবার নিয়ম হলো রাত দিনে দুইবার এবং চারদিন। যেকোন ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
ETORIX (90mg)
এই ওষুধটি হল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ওষুধ। এই ওষুধটি মূলত বিভিন্ন প্রদাহর কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ব্যথা জ্বর এবং বিভিন্ন ধরনের কাঁটা ইত্যাদির ব্যথা দূর করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ওষুধটি।এ ওষুধ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে একটি হল কানের সমস্যা। যদি কানের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। এমনকি দাঁতের ব্যথা থাকলে আঘাত জনিত ব্যথা থাকলে এই ওষুধটি ব্যবহার হয়ে থাকে।
কানের ড্রপের নাম
এখন আমরা কিছু কানে ড্রপের নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যেগুলো ব্যবহারের ফলে কানে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এবং সংক্রমণ গুলো দূর হয়ে যাবে। এবং কান পাকা রোগের সকল সমাধান পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে কানের ড্রপের নাম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
FUNGIN
এই ড্রপ টি মূলত এন্টি ফাংশনাল ড্রপ। এটি বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক নাশকের কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের ত্বকে বা স্ক্রিনের বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এর সমস্যা রয়েছে সে ছাত্র আগের ওপরে ড্রপটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং যদি আপনার কানের মধ্যে এই ছত্রাক আক্রমণ করে বা ইনফেকশন হয় তাহলে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
BEUFLOX
এই ওষুধটি মূলত ফ্লুরোকুইনোলোন অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ। এটি মূলত বিভিন্ন ধরনের পজেটিভ ভাইরাস এবং নেগেটিভ ভাইরাস অর্থাৎ ছত্রাক দূর করতে পারে এবং এ ওষুধ টি কাজ করে আস্তে আস্তে। এই ওষুধটি একটি দেয়াল সৃষ্টি করে অর্থাৎ যেন ছত্রাক আর বেশি তৈরি না হতে পারে। এবং আস্তে আস্তে ছত্রাক বা ইনফেকশন কে ধ্বংস করে। এগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। দিনে দুইবার।
ANTAZOLO 0.1%
এটি একটি পরিষ্কার অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া নাশক ড্রপ। এই ড্রপটি মূলত সর্দির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যাদের সর্দি প্রচুর পরিমাণে লাগে তাদের নাকের মধ্যেই ব্যবহার করলে সর্দি দূর হয়ে যায়। কিন্তু এটা কানের মধ্যে দূর দিলে কানের ময়লা দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই ওষুধটি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া উচিত।
OTOCIN
এটি হলো একটি অ্যান্টিবায়োটি ড্রপ। এটি মূলত যেকোনো ধরনের সংক্রমণ রোধ করতে ভালো কাজ করে থাকে। এবং এই ওষুধটি বিভিন্ন চিকিৎসকেরাও দিয়ে থাকে। যদি কোন জায়গায় ইনফেকশনের মত সমস্যা দেখা দেয় যেমন ত্বকে বা স্কিনে মতো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এই ড্রপটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে সেসব সংক্রমণ ধ্বংস করে। এই ওষুধগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।
CLORAM
এই ওষুধটি একটি ভালো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। আমরা ডাক্তারের কাছে গেলে এই ওষুধ গুলোই দিয়ে থাকে কিন্তু আমাদের মধ্যে একটি সমস্যা রয়েছে সেটি হল আমরা নিয়ম অনুসারে ওষুধগুলো ব্যবহার করি না। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। যদি আপনারা এই ওষুধটি নিয়ম অনুসারে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। এমনকি পজেটিভ ব্যাক্টেরিয়া গুলো ধ্বংস হবে। এবং নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া গুলো ধ্বংস হবে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।
AUDICARE
এটি কানের শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ বিভিন্ন শব্দ দূষণের মধ্যে থাকেন তাদের কানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। এবং শ্রবণ শক্তি কমে যায়। তাদের ক্ষেত্রে এই ড্রপটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি এই ড্রপটির ব্যবহার করা হয় তাহলে শ্রবণ শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্লুটু বা হেডফোন কানে দিয়ে রাখে তখন তাদের কানের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তখন এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয় । এ ওষুধটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।
কান পাকা রোগের লক্ষণ।
এখন আমরা কান পাকা রোগের লক্ষণগুলো আপনার সামনে উপস্থাপন করব। যার মধ্য দিয়ে আপনি আপনার কানের কি অবস্থা তা জানতে পারবেন। চলুন তাহলে কান পাকা রোগের লক্ষণ গুলো জেনে নেওয়া যাক।
- কান পাকা রোগের কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে প্রধানত হল কানের মধ্যে দিয়ে পানি পড়া অর্থাৎ পানি গড়ে পড়া। যদি এরকম দেখেন তাহলে বুঝে নিবেন কানে সমস্যা রয়েছে। এবং কানের মধ্য দিয়ে দেখবেন পুজ বের হচ্ছে যদি এই পুজ বের হয় তাহলে বুঝে নিবেন আপনার কান পেকে গেছে।
- কান ব্যথা করবে যদি আপনার কান পেকে যায় তাহলে আপনার কানে হাত দিতে পারবেন না। প্রচন্ড পরিমাণে ব্যাথা সৃষ্টি হবে। যদি এরকম ব্যথা দেখেন তাহলে বুঝে নিবেন আপনার কান পেকে গেছে।
- কানে কম শোনা। যদি কানে কম শোনেন তাহলে বুঝে নিবেন আপনার কানে কোন ধরনের সমস্যা রয়েছে। যদি এসব ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তাহলে অবশ্যই একটি ভালো চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে।
- কানের ভিতর ফোলা ভাব যদি দেখেন তাহলে বুঝে নিবেন কানের মধ্যে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। অথবা কান পেকে গেছে। যদি এরকম দেখেন তাহলে একটি ভালো কানের ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
- মাথা ব্যাথার মত সমস্যা তৈরি হতে পারে। যদি আপনার কান পেকে যায় এটি কোন কোন ক্ষেত্রে না হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যদি কান পেকে যায় তাহলে এই সমস্যাটি তৈরি হয় অর্থাৎ মাথা ব্যথা।
কানে পুঁজ হলে করণীয় কি?
কানে পুঁজ হলে করণীয় কি এটি আমাদের সকলের জেনে থাকা উচিত। আমাদের এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয় বা হয়ে থাকে তাহলে বিস্তারিত ভাবে বুঝতে পারব। যদি আপনার কানে পুঁজি তৈরি হয় তাহলে ভালোভাবে পুজ গুলো পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবং এগুলো নিজে নিজে পরিষ্কার করা যাবে না। একটি ভাল চিকিৎসকের কাছ থেকে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবং তারা কি ধরনের ওষুধ দিবে সেই ওষুধ ঠিকভাবে খেলে কানের সমস্যা দূর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
উপসংহার
আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মধ্যে কান পাকা রোগের ওষুধের নাম। এবং কানের ড্রপের নাম। সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। এবং কান পাকা রোগের লক্ষণ গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে কান পাকা রোগের ওষুধের নাম এবং কান পাকা রোগের ড্রপের নাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন কারন যদি অন্যরা জানতে পারে তাহলে তাদের উপকার হবে। আপনার মূল্যবান সময় আমাদেরকে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত থাকলে জানাতে পারেন।