ঘন ঘন পাদ আসে কেন - পাদ থেকে মুক্তির উপায়
ঘন ঘন পাদ কেন আসে এবং তার থেকে মুক্তি উপায় সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত জানব। এবং যদি এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে বিস্তারিত পড়ুন।
পাদের সমস্যাটি অনেকেরই রয়েছে। এর খারাপ দিকে আছে ভালো দিকে হয়েছে। কিন্তু এটি একটি মান সম্মানের ব্যাপার।যদি কোন রকম মানুষের সামনে সচরাচর বায়ু ত্যাগ করা যায় তাহলে অপমানজনক বিষয় বলে মনে হয়। কিন্তু যদি আমরা এই বায়ু গুলো পেটের মধ্যে চেপে রাখে তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
পাদ কাকে বলে ।
এখন আমাদের জানার বিষয় হলো পাদ কাকে বলে? পাদ হল পেটের মধ্যে থাকা মলদ্বারের ভেতর দিয়ে যে বায়ু বের হয় তাকেই পাদ বলা হয়। এবং এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত রয়েছে। এই পাদ মূলত বিভিন্ন কারণে দেখা দেয়। যেমন খাদ্য দেশের জন্য এবং বিভিন্ন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আর অন্যান্য কারণে দেখা দিতে পারে। আমাদের মধ্যে কিছু মানুষের এই সমস্যাটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এবং তাদের বায়ুর প্রচুর পরিমাণে গন্ধ অর্থাৎ তাদের প্রচুর পরিমাণে দুর্গন্ধ রয়েছে। এর থেকে এখন মুক্তির উপায় সম্পর্কে বলবো।
ঘনঘন পাদ আসে কেন?
ঘন ঘন পাদ আসার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। আমরা বেশ কয়েকটি কারণ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
- খাওয়ার জন্য আমাদের এই পাদের সমস্যাগুলো তৈরি হয়। যদি আমরা খাওয়ার নিয়ম অনুসারে না খায় তাহলে পাদ ঘন ঘন আসতে পারে। যেমন বেশি যদি চর্বিযুক্ত বা মশাযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলি এতে করে হজমের সমস্যা তৈরি হয়। এবং এই খাবারটি দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকার কারণে পেটের মধ্যে এটি দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে যায়। এবং এখান থেকে একটি গ্যাস তৈরি এবং এই গ্যাস্টি কিছুক্ষণ পরপর তৈরি হতে থাকে। এবং বায়ু পথ দিয়ে বের হয়ে আসে।তখনই ঘন ঘন পাদ সৃষ্টি হয়।
- কাইফেন যুক্ত পানি পান করা। অর্থাৎ আমরা একটি কমন খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো আমাদের ঘন ঘন পাদ হতে সাহায্য করে। এবং তাদের দুর্গন্ধ করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার মধ্যে কয়েকটি নাম হলো চা। আমার সকলে জানি চা এটি অনেক কসা । এবং এটি হজমের সমস্যা করে। যদি আপনি নিয়মিত চা খান তাহলে আপনাকে ক্ষুধা লাগবে না এবং কফিও এর মধ্যে পড়ে তাই যদি আপনারা কাইফেন যুক্ত খাবার বেশি করে খান তাহলে ঘনঘন পদ আসতে পারে।
- ফাইবার যুক্ত খাবার কম করে খাওয়া। ফাইবার এমন একটি উপাদান যেটি মলকে নরম করতে বেশ ভালো কাজ করে এবং টয়লেট দ্রুত হতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে অথবা পায়খানা প্রচুর পরিমাণে শক্ত হয় তারা ফা্বাইবারর যুক্ত খাবার বেশি করে খেতে পারেন।এতে করে পায়খানা সমস্যার সমাধান হবে। এবং ঘনঘন পাদ আসবেনা পেটের মধ্যে কোন গ্যাসটিক তৈরি হবে না।
- অল্প পরিমাণে পানি পান করার ফলে এই সমস্যাগুলো হতে পারে। একটি পায়খানা নরম করতে গেলে অবশ্যই সেটি পানির প্রয়োজন পড়ে। আর যদি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকে অর্থাৎ যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খান তাহলে ঘন ঘন বায়ু বা পাদ আসতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে বাজে খাবার গ্রহণ করা। যদি আপনি অতিরিক্ত ভাবে অনেক বাজে খাবার গ্রহণ করেন তাহলে ঘন ঘন পাদ আসতে পারে। এবং হজমের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই অতিরিক্ত খাবার থেকে দূরে থাকবেন।
- মুলা খাওয়ার কারনে পাদ গন্ধ হয়
দুর্গন্ধ পাদ থেকে মুক্তির উপায়।
দুর্গন্ধ পাদ থেকে মুক্তির কয়েকটি উপায় রয়েছে। যদি আপনারা এই উপাগুলো সুন্দরভাবে এবং নিয়ম অনুসারে পালন করতে পারেন তাহলে ঘনঘন পাদ আসবেনা এমনকি দুর্গন্ধ বাদে হবে না। চলুন তাহলে দুর্গন্ধযুক্ত পাদ থেকে মুক্তির উপায় জেনে নি।
- মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়া। অর্থাৎ অতিরিক্ত যদি মসলাযুক্ত খাবার না খান তাহলে ঘন ঘন পাদ আসবে না এবং দুর্গন্ধযুক্ত পাদ হবে না।
- চর্বিযুক্ত খাবার কম করে খাওয়া। যদি চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খান তাহলে ঘন ঘন পাদ আসবে। আর যদি কম করে খান তাহলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু আমাদের ওপরে নিয়মগুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনার পাদ হবে না এবং পাদের দুর্গন্ধ হবে না।
- অতিরিক্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ একটি মানুষকে প্রতিদিন সর্বনিম্ন গড়ে 10 থেকে 12 গিলাস মত পানি পান করতে হবে। যদি 10 থেকে 12 বিলাস মত পানি পান করে তাহলে তার পাদ হবে না এবং দুর্গন্ধ হবে না পাদে ।
- প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করতে হবে । এই ব্যায়ামের মধ্য দিয়ে হজম শক্তি ভালো বৃদ্ধি পায়। যদি হজম শক্তি ভালো থাকে তাহলে আপনার পাদে দুর্গন্ধ হবে না এবং ঘনঘন পাদ হবেনা।
- দুই গন্ধযুক্ত পাদ থেকে মুক্তির উপায় একটি রয়েছে। সেটি হল ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়া। যদি আপনি ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি করে খান তাহলে পায়খানা নরম হবে এমনকি দুর্গন্ধযুক্ত পাদ হবে না।
পাদের উপকারিতা কি?
আমরা সকলেই জানি পাদের একটি বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। এবং আমাদের মধ্য অনেকে আছে যারা পাদে অর্থাৎ বায়ু ত্যাগ করতে সংকোচ বোধ করে। তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলব অর্থাৎ উপকারিতা বলবো।
- পেট ফাঁপা দূর করতে পাদ একটি অত্যন্ত উপকারী। আমাদের যাদের পেট অল্পতে ফেঁপে যায় অথবা পেট ফুলে যায় তারা যদি ঘনঘন পাদে তাহলে তাদের পেট ফোলা সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়।
- হার্টের সমস্যা দূর করতে পাদ অত্যন্ত উপকারী। যদি আপনার হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি যদি ঘন ঘন পাদেন তাহলে হার্ট সুস্থ থাকবে এবং হার্টের তেমন কোন সমস্যা হবে না।
- কিডনি ভালো রাখতে আপনি ঘন ঘন পাদতে পারেন। যদি আপনার পাদ আসে তাহলে কোন ভাবে আটকাবেন না। বায়ু ত্যাগ করবেন। মলত্যাগ করবেন। যদি এগুলো করতে পারেন তাহলে কিডনি সুস্থ থাকবে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পাদ অত্যন্ত উপকারী। যদি আপনি ঘন ঘন পাদেন তাহলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি বেশি পরিমাণে খেতে পারবেন।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আপনি ঘন ঘন বায়ু ত্যাগ করতে পারেন। অথবা মাল ত্যাগ করতে পারেন। যদি পাদেন তাহলে আপনার পেটের গ্যাস্টিকের সমস্যা গুলো দূর হবে।
- মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে যদি আপনি ঘন ঘন পাদেন তাহলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে। আর যদি না পাদেন তাহলে মস্তিষ্কে অনেক ধরনের সমস্যা হবে। যেমন বিরক্তিবোধ করবেন অথবা অসস্তিবোধ মনে হবে।
পাদ আটকায় রাখলে কি হয়?
পাদ আটকে রাখলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এর মধ্যে আমরা এখন কি কি সমস্যা হয় সেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরব চলুন তাহলে শুরু করি।
- যদি পাদ আটকায় রাখেন তাহলে অনেক ধরনের পেটের সমস্যা তৈরি হয়। যেমন তাদের অন্যতম কারণ হলো যধন মল আসে তখন যদি মলকে আটকানো যায় তাহলে ঘন ঘন পাদ হবে। আর যদি মল আটকে রাখেন তাহলে এই মলটি পরবর্তীতে অনেক শক্ত হয়ে যাবে এমনকি অন্য সময় যখন পায়খানা করতে যাবেন তখন অনেক বড় ধরনের ব্যথা সৃষ্টি হবে। এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।
- যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে পাদ চেপে রাখেন তাহলে কোলনে সমস্যা তৈরি হবে। এবং মলদ্বারে নিচে কিছু শিরা রয়েছে সে শিরা গুলো ফোলা ফোলা ভাব সৃষ্টি তৈরি হবে। এবং চুলকানির মতো সমস্যা অথবা ব্যথা র*ক্তপাত ইত্যাদির মত সমস্যা তৈরি হতে পারে।
- দীর্ঘ সময় ধরে পাঁদ চেপে রাখলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে। এমনকি বদহজমের মত সমস্যা হবে। যেমন কিছুক্ষণ পরপর ঢেকর উঠবে এবং সেই ঢেকুর গুলো অনেক গন্ধযুক্ত হবে।
- দীর্ঘক্ষণ ধরে পাদ আটকে রাখলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হবে। এবং পেট ফোলা ইত্যাদি ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- বর্তমানে এখন কোলন ক্যান্সার অত্যন্ত হারে ছড়িয়ে পড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো পাদ অথবা পায়খানা আটকে রাখা। মলদার আটকে রাখা।, যদি এই রকম ভাবে পায়খানা বা মল আটকে রাখেন তাহলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি অন্যান্য গবেষণা থেকে পাওয়া গেছে।
- দীর্ঘ সময় ধরে পায়খানা বন্ধ রাখলে অস্বস্তি বোধ মনে হবে। এমনকি শরীরের ভারসাম্য থাকবে না। তাই যদি পায়খানা বা মলদ্বার আসে তাহলে দ্রুত এটি সেরে ফেলা উচিত।
কি খেলে পাথ গন্ধ হয়?
পাদ গন্ধ হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি খাবার রয়েছে। যে খাবারগুলো খাবার ফলে পাদ বন্ধ হতে পারে। এবং পাদ বন্ধ হওয়ার আরো কয়েকটি কারণ রয়েছে সে কারণে পাদ গন্ধ হতে পারে ।চলুন তাহলে জেনে নি।
- চর্বিযুক্ত খাবার খেলে।
- তেল যুক্ত খাবার খেলে।
- অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খেলে।
- দীর্ঘক্ষণ ধরে পায়খানা না করলে ।
- ফাইবার যুক্ত খাবার কম করে খেলে ।
আরো ইত্যাদি কারণে পাদ বন্ধ হতে পারে। যদি এই পাদ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকে তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পাদের দুর্গন্ধ দূর করার ট্যাবলেট এর নাম।
পাদের দুর্গন্ধ ট্যাবলেট এর নাম আমরা এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের পাদে দুর্গন্ধ অনেক পরিমাণে আছে। এবং তারা দ্রুত যদি ছাড়াতে চায় তাহলে তাদেরকে কয়েকটি নিয়ম এবং কয়েক টি ওষুধ খেলে সেরে যাবে ইনশাল্লাহ। চলুন তাহলে পাদের দুর্গন্ধ দূর করার ট্যাবলেটের নাম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
পা্দের গন্ধ দূর করার জন্য আপনাকে (সেকলো ২০) ওষুধটি খেতে হবে। এই ওষুধটি যদি আপনি দিনে তিনবার খান খাওয়ার আধাঘন্টা আগে তাহলে পাদের দুর্গন্ধ চলে যাবে।
পাদের দুর্গন্ধ দূর করতে গেলে আপনাকে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল ভাল ভাবে মল ত্যাগ করতে হবে। যদি আপনি পরিপূর্ণভাবে মলত্যাগ করেন তাহলে পাদের যে কোন দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে ।
উপসংহার
আজ আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে পাদ কাকে বলে এবং ঘন ঘন পাদ আসে কেন দুর্গন্ধযুক্ত পাদ থেকে মুক্তির উপায় এবং পাদের উপকারিতা কি এবং পাদ আটকায় রাখলে কি হয় এবং কি খেলে পাদ বন্ধ হয় এবং পাদ দুর্গন্ধ দূর করার ট্যাবলেটের নাম সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। আর এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আরেকটি কথা মনে রাখবেন যে যদি আপনি উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিতে পারেন। আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ।